মায়ের লিভারে জীবন পেলো আমান
স্টাফ রিপোর্টার : মায়ের দেয়া লিভারে নতুন জীবন পেলো ৩ বছর বয়সী আমান জাওয়াদ উদ্দিন। দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে লিভার প্রতিস্থাপন করা হয় এই বাংলাদেশি শিশুর। রাজধানীর একটি হোটেলে চিকিৎসকরা শিশু আমানের অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমান জাওয়াদকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জানা যায় হেপাটাইটিস-এ এর কারণে শিশুটির লিভার বিকল হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে শিশুটির লিভার প্রতিস্থাপন করাতে বলেন।
তার পরিবার দিল্লির অ্যাপলো হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর ভারতীয় হাই কমিশন ‘রেকর্ড সময়ের’ দ্রুততায় ভিসা ইস্যু করে আমানের জন্য।
হাসপাতালে ভর্তির পর পরীক্ষা করে দেখা যায়, আমানের মা তানজিম রাহার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত। ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে পৌঁছার ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই শিশুটির লিভার প্রতিস্থাপনের অপারেশন শুরু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, লিভার প্রতিস্থাপনটি সফল ছিলো। অপারেশনের ৫ম দিনের মাথায় আমান তার পরিবারকে চিনতে পারে এবং কথা বলতে শুরু করে।লিভার প্রতিস্থাপনের সঙ্গে যুক্ত অ্যাপোলো হাসপাতালের গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. অনুপম সিবাল বলেন, অপারেশনটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ শিশুটি ইতোমধ্যেই হেপাটনিক এনকেফেলাপ্যাথি’র তৃতীয় পর্যায়ে থাকার কারণে লিভার দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে পারছিলো না। এর ফলে মস্তিষ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো।
‘এই পরিস্থিতিতে জরুরি ভাবে লিভার প্রতিস্থাপনই ছিল শিশুটিকে বাঁচানোর একমাত্র উপায়। আমরা এমন একটি জটিল কাজ বিপদমুক্তভাবে করতে পেরে অত্যন্ত খুশি।’
১৯৯৮ সালে দিল্লি অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রথমবারের মত সফল লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সম্পন্ন হয়। তখন থেকে অ্যাপোলো’তে দুই হাজার নয়শ’র বেশি লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৩৫ জন শিশু। বাংলাদেশের বারডেম হাসপাতাল ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো স্বল্প পরিসরে লিভার প্রতিস্থাপন শুরু করে।