মাশরাফির ম্যাজিক
দিনা করিম.ঢাকা: এবার মাশরাফির ম্যাজিক ওদখল বাংলাদেশে। বল হাতে দুর্দান্ত শুরু, শুরুতেই গুঁড়িয়ে দেওয়া প্রতিপক্ষের মনোবল। মাঠে একের পর এক অভাবিত সব রণকৌশল। এর পর দলের প্রয়োজনে চওড়া হওয়া ব্যাট। আজকের ম্যাচ সেরা পুরস্কারটি হয়তো ওঠেনি তাঁর হাতে। কিন্তু ব্যাটে-বলে-নেতৃত্বে আজকের ম্যাচটা যেন মাশরাফিরই ম্যাচ।
বল কিংবা ব্যাটে কিচ্ছু করার দরকার নেই। শুধু নেতৃত্ব গুণেই তিনি একাদশে জায়গা রাখতে পারেন। কিন্তু মাশরাফি নেতৃত্ব দিতে ভালোবাসেন সামনে থেকেই। সেটি তিনি দিচ্ছিলেনও।
এ বছর সাফল্যের নাওয়ে ভাসা বাংলাদেশের মাঝি তিনি। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বইঠা টানা আর পাল বাঁধার মূল দায়িত্ব পালন করেছেন নাওয়ে থাকা সতীর্থরা, তিনি শক্ত হাতে ধরে রেখেছিলেন হাল। সতীর্থদের, আরও বেশি করে পৃথিবীকে কিছু করে দেখানোর দুঃসাহস নিয়ে দলে আসা তরুণদের ওপর সব আলো ছড়িয়ে দিয়ে তিনি থেকে যাচ্ছেন আড়ালে। তবে আজ মাশরাফি নিজেই আলো ছড়ালেন সবখানে।
শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা। প্রথম তিন ওভারে ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট! জিম্বাবুয়েকে শুরুতে কোণঠাসা করেছেন। মাঝখানে ৫ ওভারে ৬৬ রান তুলে জিম্বাবুয়ে যখন চোখ রাঙাচ্ছে, সেই সময় মাশরাফির আশ্চর্য কিছু চাল। আগের ওভারে ১২ রান দেওয়ার পরও মাহমুদউল্লাহকে আনলে যেন স্ট্রাইক বোলারদের ওভার খরচ না হয়।
মাহমুদউল্লাহর উইকেট মেডেন! ক্যারিয়ারে প্রথম ওভারে ১৭ রান দিয়ে বসা যুবায়েরকে আনলেন। যুবায়ের তিন রান দিয়ে দুই উইকেট! মাশরাফির সব চালই জিম্বাবুয়েকে ১৩১-এ আটকে রাখল, অথচ হওয়ার কথা ছিল ১৬০-১৭০! এর পর ১৩২ রানের সহজ লক্ষ্যটা তাড়া করতে গিয়ে খানিকটা চাপে পড়া দলকে অপরাজিত ১৫ রানে বিজয়ের বন্দরেও নিয়ে গেলেন।
মাশরাফি বলেন, ‘কখনোই ব্যাটিং নিয়ে কাজ করিনি। করার সুযোগ হয়নি আমার ক্যারিয়ারে। চোটাক্রান্ত হওয়ায় সব সময়ই বোলিং নিয়েই ভেবেছি। ফিরতে হলে আমাকে বোলিং দিয়েই ফিরতে হবে। বোলিং এমনই জিনিস, ম্যাচের পর ম্যাচ খেলে জায়গায় আসতে হবে। তবে হ্যাঁ মানসিকভাবে একটু পরিবর্তন করেছি। ওই সময় যদি ওভার ও ব্যাটসম্যান থাকে, তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। আমি যখন আটে নামব, তখন অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানকে তো সঙ্গ দিতেই হবে। এ মানসিকতাটুকুই পরিবর্তন করেছি। তবে সব সময় অনুভব করি ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিং গুরুত্বপূর্ণ।’