• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘মাল’ খেয়ে টাল সেই’ডিআইজি প্রত্যাহার


প্রকাশিত: ২:০৫ পিএম, ৩ জুলাই ১৮ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪০৩ বার

এস রহমান  :   ‘মাল’ খেয়ে টাল সেই ডিআইজি কে অবশেষে প্রত্যাহার করেছে পুলিশ প্রশাসন।ভুক্তভোগীরা অভিযোগে বলেছেন, Dig moniruzzaman-www.jatirkhantha.com.bdশুধু মাল খেয়ে টাল বলা হলে ভুল বলা হবে। কারণ, তিনি টাকা খেয়েই ক্ষান্ত হতেন না যিনি ক্ষেত রক্ষা করবেন সেই ক্ষেতের বেড়াও খেয়ে ফেলতেন।অর্থাৎ রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ তদন্ত করছে উর্ধ্বতণ পুলিশ কর্তৃপক্ষ।এর মধ্যে ইয়াবা কারবারির সঙ্গে আঁতাত, পোস্টিং বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে ‘মাল খোর নামে অভিহিত’ এই ডিআইজিকে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর বলেছে, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের বহুল আলোচিত ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামান আর সেখানে নেই। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরের টিআর (ট্রেনিং রিজার্ভ) পদে বদলি করা হয়। একই সঙ্গে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুককে চট্টগ্রাম রেঞ্জের নতুন ডিআইজি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, মোটা অঙ্কের টাকায় আপসরফা করে জিএম ছারোয়ার নামে এক ইয়াবা কারবারিকে চার্জশিট থেকে বাদ দেন ডিআইজি মনির। এ ছাড়া কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, উখিয়া ও চট্টগ্রামের একাধিক ইয়াবা কারবারি ও গডফাদারকে মামলা থেকে রেহাই এবং যাতে তাদের গ্রেপ্তার বা চার্জশিটের আসামি না করা হয়, সে জন্য ওসিদের চাপে রাখতেন; বিনিময়ে সুবিধা নিতেন।

ইয়াবা কারবারিদের সুবিধা দেওয়া ছাড়াও চট্টগ্রামের ১১ জেলায় ওসি, ইন্সপেক্টর, এসআই, এএসআইদের গণহারে বদলি করতেন। আবার টাকার বিনিময়ে এসব কর্মকর্তাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতেন মনির-উজ-জামান। চট্টগ্রাম রেঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ থানার ওসি পদ তুলতেন নিলামে।

পরে ওসিরা ডিআইজিকে যে টাকা দিয়ে পোস্টিং নিতেন সেই টাকা তুলতে নানা অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রামু থানার একটি মামলা থেকে ইয়াবা কারবারি জিএম ছারোয়ারকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত করে পুলিশ সদর দপ্তর এসব তথ্য জানতে পারে। অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে তদন্ত করছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ডিআইজি মনিরুজ্জামান গত ২৬ এপ্রিল কক্সাবাজার জেলার ৩৯ জন এসআইকে একযোগে পার্বত্য জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বদলি করেন। এই ৩৯ জনের মধ্যে যারা ডিআইজির সঙ্গে তার চট্টগ্রাম কার্যালয়ে দেখা করেন, তারা স্বপদে বহাল থেকে যান। আর যারা দেখা করেননি, তাদের বদলিকৃত জায়গায় যোগ দিতে হয়।

সরেজমিনে জানা যায়,  ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর রামু থানা পুলিশ ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ একটি প্রাইভেটকার ও তার চালক দ্বীন ইসলামকে আটক করে। গাড়িচালক দ্বীন ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ইয়াবার চালানের মালিক হিসেবে ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিএম ছারোয়ারের নাম বলে দেন।

এ ছাড়া গাড়িচালকের মোবাইল ফোনে জিএম ছারোয়ারের ইয়াবা সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর এসএমএস উদ্ধার করে রামু থানা পুলিশ। কিন্তু ইয়াবা কারবারি ছারোয়ারকে চার্জশিট থেকে বাদ দিতে রামুর ওসি লিয়াকত আলীকে চাপ দেন ডিআইজি মনির-উজ-জামান। ওসি লিয়াকত আলী চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির তদবির না শুনে জিএম ছারোয়ারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো জিএম ছারোয়ারের অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ কারণ দর্শানোর নোটিশের নির্দেশ দেন ডিআইজি। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ পেয়ে ঘটনার বিররণ ও কারণ দর্শানোর প্রতিবেদন দেন ওসি। ওসি লিয়াকত আলী একইভাবে প্রতিবেদনের দুটি কপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি বরাবর পাঠান। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওসিকে প্রত্যাহার করে নেন ডিআইজি। এতসব ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরসহ পুলিশ তদন্তে নামে।