মালয়েশিয়ায় ধরা পড়া একে-৪৭ পাচারকারী ফেনীর চোর আকাশ
ফেনী প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম : অবশেষে সন্ধান মিলেছে মালয়েশিয়া ফেরত সেই অপরাধীর।ফেনী পুলিশ বলেছে, মালয়েশিয়ায় ধরা পড়া একে-৪৭ পাচারকারী ফেনীর দুর্ধর্ষ চোর আকাশ। এই সেই আকাশ যে কুয়ালালামপুরে বসে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিলো। তার পুরো নাম পিয়ার আহমেদ আকাশ। এক দশক আগে ফেনীতে একে-৪৭ রাইফেল বিক্রির সময় ধরা পড়েছিলো পুলিশের হাতে।
ফেনীর পুলিশ বলছে, এক সময়ের শিবিরকর্মী আকাশ বিগত বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে জামিনে ছাড়া পেয়ে পালিয়ে মালয়েশিয়ায় যান। বাংলাদেশের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিসও জারি করেছিল।
সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ার পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ গত ১৯ অাগস্ট পুচংয়ের একটি বাসা থেকে আকাশকে আটক করে ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বাংলাদেশেও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
মালয়েশিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি দৈনিক স্টারের অনলাইন সংস্করণে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৯ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাংয়ে একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন। ঢাকার গুলশান হামলায় জড়িতদের একজনের সঙ্গে তার সাক্ষাতও হয়েছিল।
মালয়েশিয়ার পুলিশ তার নাম প্রকাশ না করলেও ইন্টারপোলের নোটিসের কথা জানিয়েছিল। আর তিনিই যে ফেনীর পিয়ার আহমেদ আকাশ, তা নিশ্চিত করেছে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ।
ইমিগ্রেশন পুলিশ জানান, মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো আকাশ ২ সেপ্টেম্বর রাতে মালিন্দ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান। পরে তাকে তুলে দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে।
পিয়ার আহমেদ আকাশ জামিনে মুক্তির পর পালিয়ে যান মালয়েশিয়ায়
ঢাকা থেকে প্রথমে দাগনভূঁঞা থানায় নেওয়ার পর ৪ সেপ্টেম্বর আকাশকে ফেনীর জজ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।তাকে ফেনী জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জেলার পুলিশ সুপার রেজাউল হক জানিয়েছেন।
দাগনভূঁঞা থানার ওসি আসলাম উদ্দিন জানান, চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র থেকে ‘খোয়া যাওয়া’ কয়েকটি একে-৪৭ রাইফেল বিক্রির সময় ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর র্যাবের হাতে ধরা পড়েন আকাশসহ তিনজন। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছিলেন, পুলিশের দুই সার্জেন্টও ওই অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
আকাশ জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে মালয়েশিয়ায় যান। অস্ত্র মামলায় হুলিয়া থাকায় তাকে ধরিয়ে দিতে রেড নোটিস জারি করে ইন্টারপোল।ফেনীর পুলিশ বলছে, মালয়েশিয়ায় আকাশের এক ভাই থাকেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
দাগনভূঁঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের আকাশ ১৯৯৩ সালে শহরের শাহীন একাডেমী স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। জামায়াত নেতাদের মাধ্যমে স্কুলটি পরিচালিত হয় বলে আলোচনা রয়েছে।
আকাশের ভগ্নিপতি আবু ইউসুফ ফেনী জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির। তার মাধ্যমেই আকাশ শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত হন বলে স্থানীয়দের তথ্য।ফেনীর মহিপাল এলাকায় ‘আকাশ টেলিকম’ নামে তার একটি দোকানও ছিল সে সময়ে।