মালিতে জিম্মি সঙ্কটের অবসান, নিহত ২৭
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্টার: মালির রাজধানী বামাকোর হোটেল র্যাডিসন ব্লু’তে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জিম্মি সঙ্কটের অবসান হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। মালিতে থাকা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, অভিযানে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা ১৮ জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মালির উত্তরাঞ্চলীয় আল কায়দা সংশ্লিষ্ট আফ্রিকান জিহাদি গ্রুপ আল মুরাবিতুন টুইটারে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ দাবির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শুক্রবার সকালে বন্দুকধারীরা হোটেলটিতে আক্রমণ চালিয়ে ১৭০ জনকে জিম্মি করার পর সেখানে অভিযান চালায় মালির নিরাপত্তা বাহিনী, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী এবং দেশটিতে থাকা ফরাসি ও মার্কিন সেনারা। হামলার নয় ঘণ্টা পর মালির নিরাপত্তামন্ত্রী সালিফ ত্রাওরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হোটেলটিতে আর কোনো জিম্মি নেই।
মালিতে থাকা বিদেশি এক নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি ১৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী দুই হামলাকারী নিহতের কথাও জানিয়েছে। এ বিষয়েও নিশ্চিত তথ্য কিংবা হামলার সঙ্গে প্যারিস হামলার কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি-না এখনো সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০১২ সালের মাঝামাঝি মালির উত্তরাঞ্চল আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট তুয়ারেগ বিদ্রোহীদের দখলে যায়। এরপর উত্তর আফ্রিকায় ইসলামিক স্টেট বিরোধী অভিযান ও মালির উত্তরাঞ্চলে তুয়ারেগ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ফরাসি সেনাবাহিনীর অভিযানে মূল ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল মালি।
বামাকোর হোটেলে হামলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রীরা ব্রাসেলসে এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা আরোপের বিষয়টি আলোচিত হয়। এদিকে প্যারিস হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইএসের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করতে জাতিসংঘে এক প্রস্তাব উত্থাপন করেছে ফ্রান্স।
১৯০ কক্ষবিশিষ্ট ওই হোটেলে শুক্রবার সকাল সাতটায় (জিএমটি) হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। তাদের বহনকারী গাড়িটিতে কূটনৈতিক লেখা নেমপ্লেট লাগানো ছিল। এসময় সেখানে হোটেলকর্মীসহ ১৭০ জন লোক ছিলেন। জিম্মিদের মধ্যে টার্কিস ও ফ্রেঞ্চ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তারা ছিলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ৬ জন, ভারতের ৭ জন ও চীনের ছয় নাগরিক আটকা ছিলেন হোটেলটিতে।
মালিতে জিম্মি সঙ্কটের অবসান, নিহত ২৭
হামলার পর মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বাউবাকার কেইটা আফ্রিকার দেশ শাদে সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেন। হামলার নিন্দা জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বন্ধুদেশ মালির পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ফ্রান্সের ৫০ জনের একটি প্যারামিলিটারি দল বামাকোর পথে যাত্রা করেছে।
গত আগস্টে মালির আরেকটি শহরে বন্দুকধরীদের হামলায় পাঁচ জাতিসংঘ কর্মকর্তাসহ চার সেনা নিহত হন। এর আগে গত মার্চে আরেকটি রেস্তুরাঁয় বন্দুকধারদের হামলায় ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ পাঁচজন নিহত হন। গত জুনে মালিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে থাকা সাবেক তুয়ারেগ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সরকারপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হয়। এরপরও বিভিন্ন ইসলামপন্থী গোষ্ঠী দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত রেখেছে।