মারদেকার আদলে বঙ্গবন্ধু কাপ-নিছিদ্র নিরাপত্তা
এস রহমান: মারদেকার আদলে বদলে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কাপ । নেয়া হয়েছে নিছিদ্র নিরাপত্তা ।কাল যশোরে শুরু হবে সেই মহারন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল ঢাকায় আসতে বাধ্য হয়েছে গত নভেম্বরে। ফিফার কাছে তাদের ভেন্যু সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবটি পাত্তা পায়নি।ক্রিকেটে নিরাপত্তাঝুঁকির কথা বলে সফর না হলেও ফুটবল এই সমস্যা থেকে মুক্ত।
গত বছর প্রায় এই সময়ে ২০-দলীয় জোটের অবরোধের মধ্যেই ঢাকা ও সিলেটে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ। ওই একই টুর্নামেন্টের পরের আসরটা যশোরে শুরু হচ্ছে আগামীকাল। বাহরাইন, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল ও কম্বোডিয়া আসছে বাংলাদেশে।
শ্রীলঙ্কা তো গতকাল এসেই গেছে। বিশাল এই ফুটবলযজ্ঞের অংশ হয়ে অতিথি দলগুলো বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে কেনো প্রশ্ন তোলেনি এখন পর্যন্ত। সবাই সানন্দেই আসছে।তবু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ ঘোষণার পর বাফুফে বঙ্গবন্ধু কাপ নিয়ে একটু বেশিই সতর্কতা অবলম্বন করছে।
কয়েক বছর ধরে বাফুফের টুর্নামেন্টে নিরাপত্তার বিষয়টি যিনি দেখাশোনা করেন, সেই বাফুফে সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হাসান কাল বাফুফ ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে জোরালো কণ্ঠেই বললেন, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে।
হোটেল, অনুশীলন মাঠ, স্টেডিয়ামসহ দলগুলো চলাফেরা করবে যেসব জায়গায়, সবখানেই কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। সেমিফাইনাল, ফাইনালের পুরো দিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকানপাট বন্ধ রাখা হচ্ছে। অন্য দিনগুলোয় দোকান বন্ধ হবে বেলা ১টায়।
শেখ মারুফ হাসান যোগ করলেন, ‘বিদেশি দলগুলোকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিয়ে গোটা আয়োজনটা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে কাজ করছি আমরা। বিমানবন্দরে নেমেই যাতে দলগুলো দ্রুততম সময়ে বেরিয়ে আসতে পারে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। যশোরেও আমরা সব ধরনের কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি।’ নিরাপত্তার রণসজ্জা দেখে বিরক্ত না হয়ে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেই অনুরোধ করেছেন শেখ মারুফ।
টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্যসচিব সালাম মুর্শেদীও নিরাপত্তার বিষয়টাকে দিচ্ছেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব, ‘আমাদের কাছে নিরাপত্তাই এখন সবচেয়ে বড় বিষয়।’ একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপকে ভবিষ্যতে আরও উঁচুতেই দেখেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি, ‘আমরা চাই এই টুর্নামেন্টটি এশিয়ার একটি মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট হোক।
এএফসির বর্ষপঞ্জিতে উঠুক। লোকে যেন এক নামে টুর্নামেন্টটি চিনতে পারে (মারদেকার কাপের মতো)।’ আরেকটি সুপ্ত আকাঙ্ক্ষাও আছে সালামের, ‘মাঠে আমরা যেমন ফলই করি না কেন, এএফসিকে অন্তত এটা দেখাতে চাই যে আমাদের আয়োজনের দক্ষতা বেড়েছে।’
তবে গতবার বঙ্গবন্ধু কাপে বয়সভিত্তিক দল এসেছে, এবার মালয়েশিয়া ও বাহরাইন দলটা জোড়াতালির। নেপাল দলটা এসএ গেমসের অনূর্ধ্ব-২৩। এমন দল নিয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট কীভাবে হবে? সালাম বলছেন, ‘আমরা চাইলেও শক্তিশালী দল পাব না। সময় ও বাস্তবতা বড় কারণ। এএফসির সূচিতে টুর্নামেন্টটা যোগ করতে পারলে তখন আরও ভালো মানের দল আনা যেতে পারে।’
তবে অতিথি দলগুলোকে শক্তিশালী দলই বলছেন সালাম। যদিও নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া অতটা সমীহ জাগানো নয়। কিন্তু বাস্তবতা এমন যে, এই দলগুলোর সঙ্গে জেতাও কঠিন বাংলাদেশের জন্য! সেটিও অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন বাফুফের কর্মকর্তারা।