মানুষের সীমাহীন লোভ-লালসা’র বর্ননা একটি ময়না পাখির মুখে..
ডেস্ক রিপোর্টার.ঢাকা: হযরত শা’বী রহমাতুল্লাহে আলাইহি বলেছেন, বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি একটি ময়না পাখি পাকড়াও করল। পাখিটি তাকে বলল, ওহে! তুমি আমাকে পাকড়াও করলে কেন? লোকটি জবাব দিল, আমি তোমাকে যবেহ করে মাংস খাওয়ার জন্য পাকড়াও করেছি।
তার কথা শুনে পাখিটি বলল, আমার গোশত যেমন তোমার তৃপ্তিকর হবে না, তেমন তোমার ক্ষুধাও মিটবে না, আমার গোশত রক্ত ও পর-পালক সবকিছু মিলিয়েও বিশ মেছকাল হবে না। আমাকে যবেহ করলে দেখবে আমার পেটে বিশ বিশ চল্লিশ মেছকাল ওজনে দু’দুটো মোতি থাকবে অতএব আমাকে যবেহ না করে আমার নিকট থেকে তিনটি উপদেশ শুনে নাও, যা তোমার জন্য বহু উপকারে আসবে। তার একটি উপদেশ শুনাব আমি তোমার করতলে অবস্থান কালে ।
দ্বিতীয়টি শুনাব আমি তোমার হাতে থেকে উড়ে গিয়ে বৃক্ষ শাখায় বসে। আর তৃতীয় উপদেশটি শুনাব পাহাড় চূড়ায় স্থান লাভের পর । তখন লোকটি বলল, আচ্ছা এবার তোমার প্রথম উপদেশটি শুনাও। পাখিটি বলল, শোন, ‘যখন কোন কিছু তোমার হাত ছাড়া হয়ে যায় তখন আর তজ্জন্য কোন আক্ষেপ করবে না’।
অতঃপর পাখিটি লোকটির হাত থেকে মুক্ত হয়ে বৃক্ষ শাখায় বসে বলল, ‘যা কখনও হয় না বা হতে পারে না, তা হয় বা হতে পারে বলে বিশ্বাস করবে না’। একথা বলে পাখিটি বৃক্ষ শাখা থেকে উড়ে পাহাড় চূড়ায় পৌছে বলল, ‘হে হতভাগা নির্বোধ ! যদি তুমি আমাকে যবেহ করতে তাহলে আমার উদরে দুটো মোতি পেয়ে যেতে। মোতি দুটোর ওজন হবে বিশ মেছকাল’। লোকটি পাখিটির মুখে একথা শুনে আক্ষেপ করে বলল, যা হবার হয়ে গেছে।
তুমি আমাকে আরও কিছু উপদেশ দাও। পাখিটি বলল, ‘তোমাকে আর উপদেশ দিয়ে কি হবে ? তুমি তো ওয়াদা ভঙ্গ কর । আমি কি বলিনি, যদি কোন কিছু হাতছাড়া হয়ে যায় তজ্জন্য আক্ষেপ করো না। আমি তোমার হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তুমি আক্ষেপ করলে কেন ? আর আমি বলেছিলাম, যা হয় না বা হতে পারে না, তা হয় বা হতে পারে বলে কখনও বিশ্বাস করবে না ।
আসলে তো আমার গোশত রক্ত ও পর-পালক সবকিছু মিলিয়েও বিশ মেছকাল হবে না । তাহলে আমার পেটে বিশ বিশ চল্লিশ মেছকাল ওজনে দু’দুটো মোতি থাকবে একথা তুমি কিভাবে বিশ্বাস করে নিলে’ ? একথা বলেই পাখিটি পাহাড় চূড়া থেকে উড়ে অন্যত্র চলে গেল ।
ঘটনাটি মানুষের সীমাহীন লোভ-লালসার একটি উত্তম দৃষ্টান্ত। যে লোভ-লালসা মানুষকে এভাবেই অন্ধ ও নির্বোধ করে দেয়, যাতে করে তারা বাস্তব সত্যকেও বুঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।