মানবতাবাদী শেখ হাসিনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র ইতিহাস-‘স্বজনের সাথে সংশোধনের পথে’
বিশেষ প্রতিনিধি : মানবতাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবার ইতিহাস গড়লেন কারবন্দীদের জন্যে ‘স্বজনের সাথে সংশোধনের পথে’ টেলিফোনে কথা বলার পথ খুলে দিয়ে। তাঁর এই উদ্যোগে দেশের কারা ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় যুক্ত হলো। ‘স্বজনের সাথে সংশোধনের পথে’ স্লোগানে শুরু হলো কারাবন্দীদের জন্য টেলিফোনে কথা বলার কার্যক্রম। বুধবার টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বজন পরিবারের বন্ধন’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে টাঙ্গাইলে শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো কারাগারেই চালু হবে এ সেবা। এর মাধ্যমে একজন বন্দী নির্ধারিত দুটি টেলিফোন নম্বরে প্রতি ১৫ দিনে একবার ১০ মিনিট করে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। প্রতি মিনিটের জন্য চার্জ দিতে হবে ১ টাকা। অবশ্য কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিরা এই সুযোগ পাবে না। কথা বলার এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে একজন বন্দীকে আগে থেকেই তার পরিবারের দুইজন সদস্যর ফোন নম্বর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে সরবরাহ করতে হবে। এরপর নির্ধারিত দিনে একজন কারা সদস্যের উপস্থিতিতে কথোপকথন শুরু হবে। তবে কোনো বন্দী সরাসরি বুথে গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ১ বা ২ চাপলে সফটওয়্যার থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাঙ্ক্ষিত নম্বরে সংযোগ পাওয়া যাবে।
তবে আমরা জানি, দুই বছর আগেই এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা বিলম্বিত হয়েছে। তারপরও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দিতেই হবে। দেশের কারাগারগুলোতে প্রভাবশালী বন্দীরা নানা কৌশলে মোবাইল ফোনে কথা বলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে থাকে। তাদের এই অবৈধ কাজে সহায়কের ভূমিকায় থাকে কোনো কোনো কারা সদস্য। তবে সাধারণ বন্দীদের ক্ষেত্রে এই চিত্র ভিন্ন। তাদের অনেকেই আর্থিক বা দূরত্বের কারণে বছরের পর বছর স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বা কথা বলতে পারে না।
সরকারের নতুন এই কর্মসূচি নিঃসন্দেহে সেইসব বন্দীর জন্য বিরাট সুযোগ। এটা ঠিক, পরিবার-পরিজনের খবর নিতে পেরে অনেক বন্দীই মানসিক প্রশান্তি লাভ করবে। তবে মর্মান্তিক হলেও সত্যি, আমাদের দেশের কারাগারগুলোতে আটক সব বন্দীই অপরাধী নয়। অনেক সময় দেখা যায়, মিথ্যা অভিযোগে বহু নিরাপরাধ ব্যক্তিকে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দী থাকতে হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়, কিন্তু তার জীবন থেকে হারিয়ে যায় মূল্যবান সময়।
আবার অনেক সাজাপ্রাপ্ত বন্দী তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়। আমরা জানি, কারাগারের মূল উদ্দেশ্যই হলো বন্দীকে সংশোধন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা। আমরা মনে করি, আজকের এই উদ্যোগ সেইসব বন্দীকে দ্রুত আলোর পথে আনতে সাহায্য করবে।