মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতনকারী হুজুর পাকরাও-দুই শিশু বলেছে, হুজুর খারাপ কাজ করেছে
কামরুল ইসলাম : এবার মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতনকারী হুজুর পাকরাও করেছে পুলিশ। হুজুরের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দী দিযেছেন দুই শিশু।দুই শিশু বলেছে, হুজুর খারাপ কাজ করেছে ।
আদালত সূত্র জানায়, ওরা আপন দুই ভাই। একজনের বয়স নয় বছর। আরেকজনের দশ। রাজধানীর একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। মাদ্রাসাতেই থাকে। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে শিশু দুটি আজ সোমবার আদালতে আসে। তারা বলেছে, তাদের সঙ্গে ‘খারাপ কাজ’ করেছেন মাদ্রাসার এক শিক্ষক।
গত ১৩ এপ্রিল একই শিক্ষক আট বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকার করায় সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)। ওই শিশুর বাবা রাজধানীর মুগদা থানায় মামলা করলে ১৯ এপ্রিল ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ওই শিশু নির্যাতনের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশে জানতে পারে, ওই শিক্ষক আরও কয়েকটি শিশুকে যৌন নির্যাতন করেছেন। তাদের মধ্যে এই দুটি শিশুও রয়েছে। তাদের আজ আদালতে হাজির করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার শিশু দুটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন শিশু দুটির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে শিশু দুটিকে তাদের মায়ের জিম্মায় দেন আদালত। আদালতে শিশু দুটি বলে, তাদের সঙ্গে ‘খারাপ কাজ’ করেছে মাদ্রাসার ওই শিক্ষক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপপরিদর্শক (এসআই) আফরোজ আইরিন জাতিরকন্ঠকে বলেন, ‘প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে মুগদা থানার পুলিশ। পরে মামলার তদন্তভার আমাকে দেওয়া হয়। তদন্তে বেরিয়ে আসে ২২ বছর বয়সী ওই শিক্ষক আরও দুটি শিশুকে বলাৎকার করেছেন। ওই দুটি শিশু আজ আদালতে জবানবন্দি দেয়।’
এসআই আইরিন জানান, প্রথম শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি ছিল। সে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। মানসিকভাবে একেবার ভেঙে পড়েছে। বলাৎকারের শিকার অপর দুই শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদেরও চিকিৎসা নিতে হবে।
এসআই আইরিন বলেন, ‘বলাৎকারের শিকার প্রথম শিশুটি মা–বাবার সঙ্গে থাকে। তার মা–বাবাকে বলা হয়েছে, শিশুটিকে নিয়ে যেন গ্রামের বাড়িতে যায়। কারণ, সে ঠিকমতো কথাও বলতে পারছে না। সব সময় তার মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে। তাকে ভিন্ন পরিবেশে নিয়ে যাওয়া জরুরি।’
আজ আদালতে জবানবন্দি দেওয়া শিশু দুটির মা জতিরকন্ঠকে বলেন, মাদ্রাসার এক শিক্ষক তার দুই সন্তানকে বলাৎকার করে। কিন্তু এ ঘটনা প্রথমে তারা খুলে বলেনি। কারণ, ওই শিক্ষক তাঁর সন্তানদের ভয় দেখায়। মারধরও করে। ওই শিক্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছেলেরা বলে, তাদেরও ওই শিক্ষক নির্যাতন করেছেন।
শিশু দুটির মা আরও বলেন, বলতে গেলে এরা দুধের বাচ্চা। কিছুই বোঝে না। অথচ অবুঝ এই শিশুদের নির্যাতন করলেন একজন শিক্ষক। ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।