মাথা নত করিনা বলেই চক্রান্ত: শেখ হাসিনা
ফরিদপুর প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি কারও কাছে মাথা নত করেন না। সে জন্য আরও বেশি চক্রান্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আর এই কাজের জন্য কাকে দরকার? আপনারা বলেন, কে ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে। এক মাত্র নৌকা মার্কা। নৌকা মার্কা যদি ভোট পায় আমি সরকারে আসতে পারবো। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়তে পারবো। বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে যাবে না।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেয়নি, তাদের চক্রান্ত এখনো থেমে যায়নি। আর যেহেতু তারা জানে আমরা কারও কাছে মাথা নত করি না। সেজন্য চক্রান্ত আরও বেশি।তিনি বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা। কারও কাছে মাথা নত করবো না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কেউ নেই। বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। বাংলার জনগণের কাছে খুঁজে ফিরি হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ-ভাইয়ের স্নেহ। দেশের মানুষই আমার পরিবার। আমার যা কিছু আছে বাংলার মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি।
নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের দেশে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। অনেককে একেবারে সেই বলতে গেলে নর্দমা থেকে টেনে তোলা হয়েছে। তাদের পয়সা বানানো, ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছি। মিডিয়া চালানোর সুযোগ দিয়েছি। এখন তারা টাকা ছড়ায়। তারা মনে করে টাকা দিয়েই সব কেনা যাবে। খুব ভালো কথা, টাকা তারা ছড়াক। যত টাকা বানিয়েছে ছড়াক। জনগণের হাতে যাবে।
তিনি বলেন, একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ওই টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় না। টাকা দিয়ে ফরিদপুরের জনগণকে কিনতে কেউ পারেনি, পারবে না। এ মাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাটি। এ মাটি খাঁটি। কাজেই একমাত্র নৌকা। নৌকা মার্কাই দেবে আপনাদের সমাধান। কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একুশ বছর পর সরকার গঠন করার পর দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ, আর বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় এসেই জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলে। ২০০১ এ বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতায় আসা মানে দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস আর দুঃশাসন। দেশ অচল হয়ে যায়। আসে জরুরি অবস্থা। আমি বিরোধী দলের নেতা। আমাকে গ্রেপ্তার করে। ‘২০০৮ সালে আমরা ২৩৩ সিট পাই। আর বিএনপির এত লম্পঝম্প তারা পেলো ৩০টি সিট। যেকারণে ২০১৪তে নির্বাচন করেনি। ২০১৮তে নমিনেশন বাণিজ্য করে। নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে সরে যায়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষের উন্নয়ন। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ ঘর পাবে। উন্নতভাবে বাঁচবে সেই ব্যবস্থাটা আমরা করে দেব। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই। সেলক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা দেশের তৃণমূল, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ তরুণ প্রজন্মকে আত্মনির্ভরশীল করতে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে খাদ্য আর অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। আপনাদের অনুরোধ জানাই যার যতটুকু জমি, এক ইঞ্চিও যাতে অনাবদী না থাকে। সবাই পতিত জমিতে চাষ করুন। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। জলাভূমিতে মাছ চাষ করুন। আপনিও লাভবান হবে। দেশও লাভবান হবে। গণভবন এখন খামার বাড়ি। সব করি। অনাবাদী কোনো জমি থাকবে না। ফরিদপুরবাসীকে বলবো, সব অনাবাদী জমিতে চাষ করুন। যা পারেন তাই উৎপাদন করেন।
জনসভায় শেখ হাসিনা ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চান।