• শনিবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

মহারথিদের ভবন অগ্নিঝুঁকিতে-এ্যাকশান কবে?


প্রকাশিত: ৪:৩৩ পিএম, ৩ এপ্রিল ১৯ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : বনানীতে রথি মহারথি’র বহু ভবনের অগ্নিঝুঁকি চিহ্নিত করা হলেও কোনো-এ্যাকশান নেয়া হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ শুধু ”অগ্নিঝুঁকি” ব্যানার টানিয়ে খালাস হচ্ছে। এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির পর বনানীর বিভিন্ন বহুতল ভবনের ত্রুটি চিহ্নিত করতে রাজউক তৃতীয় দিনের মতো অভিযান চালাচ্ছে। পরিচালক মামুন মিয়ার নেতৃত্বে রাজউক জোন-৪ এর একটি দল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর একটার মধ্যে চারটি ভবন পরিদর্শন করে তিনটিকে ‘অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে।এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচবিএম ইকবালের মালিকানাধীন ‘ইকবাল সেন্টার’ও রয়েছে, যেটি ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ২৩ তলা করার প্রমাণ মিলেছে রাজউকের পরিদর্শনে।

অন্য ভবন দুটি হচ্ছে ২১ তলা বুলু ওশান টাওয়ার এবং ১৬ তলা ডেল্টা ডালিয়া। রাউজকের আগেই অবশ্য ফায়ার সার্ভিস ‘অগ্নি ঝুঁকিতে’ এই দুই ভবনের সামনে ব্যানার ঝুলিয়েছে।রাজউকের দলটি সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে আওয়াল টাওয়ারে যায়। এরপর একে একে ডেলটা ডালিয়া, বুলু ওশান টাওয়ার এবং ইকবাল সেন্টার পরিদর্শন করে। রাজউকের জোন-৪ এর পরিচালক মামুন মিয়া জাতিরকন্ঠ কে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ডেলাটা ডালিয়া ও বুলু ওশান টওয়ার আবাসিক অনুমোদন নিয়ে নির্মিত হলেও দুটি ভবনের কয়েকটি ফ্লোরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছে।এছাড়া ভবন দুটিতে ফায়ার এক্সিট ত্রুটিসহ বিভিন্ন ত্রুটি পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পর রাজউকও ভবন দুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে।মামুন মিয়া বলেন, ১৯৯৬ সালে নির্মিত ডেল্টা ডালিয়া ভবনটির সিঁড়ির অবস্থা ভালো নেই। ভবনের নকশায় যে খালি জায়গাটুকু দেখানো হয়েছিল সেখানে এটিম বুথ ও দোকান করা হয়েছে। আমরা সেগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছি।

ভবনের রেসিডেন্সিয়াল পারমিশন ছিল। কিন্তু সেখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছে। নকশা পরিবর্তন করায় তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ডেল্টা ডালিয়ার ২০ জন মালিকের একজন এবি শরিফুদ্দীন বলেন, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কিছু ঘাটতি রয়েছে। আমাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। রাজউক বলে গেছে কি করতে হবে, সে অনুযায়ী ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আর বুলু ওশান টাওয়ারের ডানপাশে সিঁড়ি থাকার কথা থাকলেও তা নেই বলে জানান রাজউক পরিচালক মামুন মিয়া।

তাছাড়া এই ভবনে ফায়ার এক্সিট নীচতলা পর্যন্ত না এসে তৃতীয় তলা পর্যন্ত রয়েছে।নকশা অনুযায়ী ২১ তলা বুলু ওশান টাওয়ার আবাসিক হলেও এর ২০ ও ২১ তলায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি।তবে বুলু ওশান টাওয়ারের একজন ব্যবস্থাপক দাবি করেছেন নকশা মেনেই তাদের ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।প্ল্যান সব ঠিকঠাক আছে। ২০০২ সালে এই ভবন নির্মাণ করা হয়,বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা।

ইকবাল সেন্টার সম্পর্কে রাজউক পরিচালক মামুন মিয়া বলেন, এই ভবনটিও ঝুঁকিপূর্ণ, কোনো ফায়ার এক্সিট নেই। জিরো সেট ব্যাকে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সামনে-পেছনে জায়গা নেই। আঠারো তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছে৷ ২০১৫ সালে বাড়তি তলাগুলোর অনুমতি চেয়েছিল কিন্তু গ্রাহ্য হয়নি।ইকবাল সেন্টারে বাড়তি তলার একটি অংশে মসজিদও রয়েছে।ভবনটির বর্ধিত অংশ অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মামুন মিয়া।
তবে ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত বলে দাবি করেছেন এইচবিএম ইকবালের সহকারী জাহিদ চৌধুরী।।এর আগে গত দুইদিনে বনানীতে ৪২টি পরিদর্শন করেছে রাজউকের দল।