মহাপ্রতারক-সোপান প্রপার্টিজের গাজি আনিস হারুন পাকরাও
স্টাফ রিপোর্টার : এবার মহাপ্রতারক সোপান প্রপার্টিজের গাজি, আনিস, হারুন পাকরাও হয়েছে। এরা মাত্র ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন ওই টাকার উপর ১৩০০ টাকা লাভ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যা মাসিক হিসেবে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার টাকা। এভাবে অতিরিক্ত লাভের লোভ দেখিয়ে ১ হাজার ৪২৭ জনের কাছ থেকেই চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে ৬ কোটি টাকা! সোপান প্রপার্টিজ লিমিটেড নামের একটি ভয়াবহ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রতারণা করতে করতে শেষ পর্যন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জালে ধরা পড়ে। আজ মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গাজী মহিউদ্দিন (২৭), আনিছুর রহমান (৩৭) ও মো. হারুনুর রশীদ (৩৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ টি কম্পিউটার, নগদ ৪৭ হাজার ৪০০ টাকা ও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতারণার ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৯৪ টাকা জমা পাওয়া গেছে।চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে গ্রাহকের জমাকৃত টাকা অনলাইনের মাধ্যমে কে কত টাকা মূলধন ও কত টাকা লভ্যাংশ পাবে তা সরাসরি সবাইকে দেখাতো। কিন্তু গ্রাহকরা সেই টাকা আর উত্তোলন করতে পারতো না। শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, সাধারণ মানুষকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য চক্রটি রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসে অফিস নিয়ে এই কাজ করত। যাতে করে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে বিনিয়োগ করতে কোনো সংকোচ বোধ না করে। গত ৮ মাসে মূলধনসহ ২৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য সংগ্রহ করে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল প্রতারক চক্রটি। তারা সরকারি চাকরিজীবী ও ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে সদস্য বানাতো।
তিনি বলেন, নাম মাত্র একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহকের লগইন স্লট খুলে সদস্যদের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন প্যাকেজে লভ্যাংশ দিত। চক্রটি আড়াই হাজার টাকা বিনিয়োগে প্রতিদিন ৩০ টাকা, ৭ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগে প্রতিদিন ১০০ টাকা, ২২ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগে প্রতিদিন ৩০০ টাকা, ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগে প্রতিদিন ৯০০ টাকা এবং ১ লাখ টাকা বিনিয়োগে প্রতিদিন ১৩০০ টাকা লভ্যাংশের কথা বলতো। কিন্তু বাস্তবে এইটাকা কেউ তুলতে পারতো না।
শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, একজন সদস্য বিনিয়োগের জন্য ৩ জনকে নিয়ে এলে তাকে ১০ শতাংশ বোনাসসহ ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত লাভ দিত। এভাবে ৩ মাসে ১ হাজার ৪২৭ জনের কাছ থেকে প্রায় ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি।তিনি বলেন, এদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়ে গোয়েন্দা অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।