মর্গে যাওয়ার পথে জেগে উঠল লাশ!
অরুণ মিত্র: রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প ‘জীবিত ও মৃত’ মনে আছে? চিতা থেকে হঠাত্ বেঁচে উঠছিল ‘মৃত’ কাদম্বরী। রবিবাসরীয় মুম্বই প্রায় সে রকমই একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল।
গত ১ নভেম্বর প্রকাশ নামে গুরুতর অসুস্থ বছর পঞ্চাশের এক ভবঘুরেকে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যালিটির অধীনস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। হাসপাতাল সিএমও প্রকাশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর দেহের ময়না তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
মর্গে যাওয়ার পথে সবাইকে চমকে দিয়ে হঠাত্ই প্রকাশের পেটের কাছটা ওঠানামা করা শুরু করে। হাসপাতাল কর্মচারীরা এই ‘ভুতুড়ে’ কাণ্ডে প্রাথমিকভাবে বেজায় ঘাবড়ে যান। তাঁদের মধ্যেই একজন খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে প্রকাশের নাকের কাছে হাত রাখলে গরম নিঃশ্বাসের উপস্থিতি টের পান। তত্ক্ষণাত্ খবর যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে সাঙ্ঘাতিক একটা ভুল থেকে এক চুলের জন্য রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। তড়িঘড়ি প্রকাশকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের ডিন জানিয়েছেন, প্রকাশকে যখন নিয়ে আসা হয়েছিল তখন প্রকাশের নাড়ি চলছিল না, স্থির হয়ে গিয়েছিল চোখের তারা। শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল না হৃদস্পন্দন। এই অবস্থায় নাকি তাই ‘ভুল’ করে ফেলেছেন চিকিত্সকরা।
প্রশ্ন ওঠে, ময়নাতদন্তের নির্দেশের আগে নিয়ম অনুযায়ী কেন অন্তত দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করা হল না? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের কোর্টেই ডিন বল ঠেলে দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ পুলিশ নাকি এতটাই তাড়া দিচ্ছিল, তাঁরা চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গল্পে কিন্তু আবার ‘বেঁচে’ ওঠার পর কাদম্বরীর পরিণতি অত্যন্ত দুঃখের হয়েছিল। ভবিষ্যত্ প্রকাশের জন্য কী জমা করে রেখেছে? তার উত্তর কেউই বোধ হয় জানেন না।