• শনিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

মমতাজের কনসার্ট নিয়ে লেবাননে বিতর্ক


প্রকাশিত: ৩:৫৪ পিএম, ২৪ জুন ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৭৫ বার

 

লেবানন থেকে বনি আদম : আগামী ১০ জুলাই একটি কনসার্টে গান গাইতে লেবাননে আসার কথা 111রয়েছে কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের। এনিয়ে লেবানন প্রবাসিদের মাঝে চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক। বাংলাদেশিদের বিভিন্ন হোয়াটস আপ গ্রুপ, ভাইবার গ্রুপ এমনকি কেউ কেউ ফেইসবুকে মমতাজ বেগমের লেবানন আসা’র খবরে নিন্দা জানিয়েছেন।

কারণ, হিসেবে জানা যায়। গত বছর মমতাজ বেগমের কনসার্টের মধ্য থেকে এক প্রবাসিকে তুলে এনে খুন করেছিল আরেক বাংলাদেশি প্রবাসি। আর সেই খুনের জন্য সকল প্রবাসিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এলেও দুঃখ প্রকাশ করেননি মমতাজ বেগম।

উল্টো যেদিন সজিব খুন হয়েছিল তার পরের সপ্তাহে মমতাজ বেগম আরেকটি কনসার্ট করেছিলেন। এনিয়ে লেবানন প্রবাসি বাংলাদেশিদের মনে বইছে প্রচ- ঘৃণা।

উল্লেখ্য, ৯ মে ২০১৫ লেবানন একটি কনসার্টে গান গেতে লেবানন এসেছিলেন বাংলাদেশর জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী মনির খাঁন এবং মমতাজ বেগম এমপি। ইন্ডিয়ান পাম্মা প্রোডাক্টশন এর আয়োজনে সেই কনসার্টের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, লেবানন আওয়ামী লীগের একাংশের তৎকালীন সভাপতি লুৎফর রহমান শ্যামল।

লেবানন বাংলাদেশিদের মাঝে মমতাজ আর মনিরের নামে সাড়া পড়ে যায়, হাজার হাজার প্রবাসিরা ২০ থেকে ৪০ ডলারে টিকেট কিনে আসেন সেই কনসার্টে। এই গানের আসরে দশর্কদের জন্য রাখা হয়নি কোন চেয়ারের ব্যবস্থা বা অন্য কোন সু-ব্যবস্থা। তারপরও ছিল মানুষের উপচে পরা ভীড়। মমতাজ আর মনির বলে কথা।

সেদিন ৯ মে রোববারের অনুষ্ঠানের শেষের দিকে আনুমানিক রাত আটটার পর সজিব নামে একটি ছেলেকে বাংলাদেশি কিছু বিপদগামী প্রবাসি তুলে নিয়ে গিয়ে রাত নয়টার দিকে বৈরুতের আইন আল-রুম্মানী এলাকায় গুলি করে পালিয়ে যায়।

লেবানন তৎকালীন আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি কাশেম সাদীর ভাগীনা ছিলেন সজিব, সজিব তার মায়ের একমাত্র ছেলে ছিল। সজিবের ঘাতক হিসেবে অভিযোগ রয়েছে পিয়াস নামের একজনের বিরুদ্ধে, যিনি লুৎফর রহমান শ্যামলের আত্মীয়।

সেই সময় খুনের অভিযোগে সভাপতি শ্যামল গ্রেফতার হয়েছিলেন, দলীয় কোন্দলে কাশেম সাদীকে দাবিয়ে রাখতে পিয়াসকে দিয়ে সজিবকে খুন করিয়েছিলেন অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। আর তাকে নির্দোষ দাবি করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। সেই সাংবাদিক সম্মেলনের পরে আরেকটি কনসার্ট করার কথা বলেন মমতাজ বেগম। টিকিট ২০-৪০ ডলার নির্ধারণ থাকলেও তা ১০ ডলারের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

লেবানন প্রবাসিরা এমন একটি খুনের ঘটনায় শোকাহত ছিলেন। বেশকিছু কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ মমতাজ বেগম কে অনুরোধ করেছিলেন পরবর্তী শো’ না করতে। সেদিন কারো কথাই তিনি শুনেন নি।

এখন আবার আকেরটি কনসার্ট করতে আবারো লেবানন আসছেন শিল্পী মমতাজ। তাই এখন প্রশ্ন বাংলাদেশিদের মনে, মমতাজ বেগম তিনি শুধু একজন শিল্পী নন, তিনি একজন সংসদ সদস্যও। আর একজন এমপি হয়ে তিনি একজন বাংলাদেশির খুনে শোক তো প্রকাশ করেননি বরং আরেকটি কনসার্টের টিকিটের দাম কমিয়ে বাংলাদেশিদের গানে যাবার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন, যদিও সেই কনসার্টে দেড়শ’ দর্শক হয়েছিল কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রবাসীরা। তিনি আবার কি করে লেবানন আসেন গান গাইতে এমন প্রশ্নও তোলেন অনেকে।

সুশীল সমাজ লেবাননের সভাপতি আমির হোসেনের প্রশ্ন, একজন এমপি যিনি জনগণের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে কাজ করার কথা আর তিনি কিনা আবার আসবেন লেবানন গান গাইতে। কোন মানবিকতাকি নেই তার মাঝে। এখনো সজিবের রক্তের গন্ধ লেবানন থেকে মুছে জায়নি। তিনি মানবিকতাকে টাকার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন, এমন প্রশ্নও উঠে প্রবাসীদের মাঝে।

গত বছর মমতাজ বেগম বৈরুত দূতাবাসের সহযোগিতায় এসেছিলেন, এবারো তিনি দূতাবাসের সহযোগিতায় আসছেন কিনা জানতে চাইলে দূতাবাস কর্মকর্তা জানান, ওনার আসার বিষয়ে দূতাবাস কিছু জানেন না। তিনি শিল্পী, গান গাইতে আসবেন, আসতে পারেন। সংসদ হিসেবে আসছেন এমন কোন সংবাদ দূতাবাসে নেই বলেও জানান দূতাবাস সূত্র।