• বুধবার , ২৭ নভেম্বর ২০২৪

মধু কবির শহরে ফুটবল উৎসবে আজ প্রাণের লড়াই-বাংলাদেশ-শ্রীলংকা


প্রকাশিত: ২:৪৮ এএম, ৮ জানুয়ারী ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১৭ বার

33যশোর থেকে ইমরুল শাজেদ:   মধু কবির শহরে ফুটবল উৎসবে প্রাণের লড়াই আজ -বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ। স্টেডিয়ামের কাছাকাছি এমএম কলেজ হওয়ায় স্টেডিয়ামপাড়ার ব্যস্ততা সারাদিনই। তার পরও ব্যস্ততা ছাপিয়ে যেন উৎসবে গমগম করছিল পুরো এলাকা। ছেলে-বুড়ো সবার উৎসুক-দৃষ্টি, স্টেডিয়ামের ভেতর হচ্ছেটা কী? কারও কৌতূহল ‘ভাই টিকিট পাওয়া যাবে কোথায়?’

যার কাছে জিজ্ঞাসা, সে তো নিজেই টিকিটেরই খদ্দের। সঠিক উত্তর দেওয়ার মানুষও আছে, না হলে কি আর টিকিট কাউন্টারের সামনে থাকে লম্বা লাইন। আজ শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের উদ্বোধনী ম্যাচটা দেখা চাই যে সবারই।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল উপলক্ষে স্থানীয় আয়োজকদের প্রচারটা আহামরি কিছু নয়। বলা চলে, স্টেডিয়াম এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কয়েকটি বড় তোরণ দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোরণে লেখা আছে ‘বি সাকসেসফুল’।

এ ছাড়া আশপাশের এলাকাগুলোতে লাগানো হয়েছে ছোট ছোট বিলবোর্ড; স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ‘প্যানা’। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং কয়েকদিন ধরে চলা মাইকিংয়ের জন্য নিজেদের শহরে যে ফুটবল উৎসব শুরু হতে যাচ্ছে, তা মোটামুটি সবারই জানা।

২০১৪ সালে এই বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ দিয়েই যশোরবাসী দেখিয়ে দিয়েছিল, তারা ফুটবল ভালোবাসে। ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না মাঠে ও মাঠের বাইরে। আজও যে মাইকেল মধুসূদন দত্তের শহর পরিণত হবে উৎসবে, তা সহজেই অনুমেয়। উদ্বোধনী ম্যাচসহ যশোরে দুই গ্রুপের ম্যাচ হবে চারটি।

অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলতে আসা আটটি দলেরই পা পড়বে যশোরে। এখান থেকেই শুরুটা ভালো করতে চান বাংলাদেশ কোচ মারুফুল হক, ‘আগামীকালের ম্যাচটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচটি জিততে পারলে দলের চেহারাই বদলে যাবে। পরবর্তী ম্যাচগুলোতে পাওয়া যাবে আত্মবিশ্বাস।’

ম্যাচটি ঘিরে গতকাল বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে টিকিট বিক্রি। আয়োজকদের দাবিমতে শহরের ১০টি পয়েন্টে টিকিট বিক্রির কথা রয়েছে। স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে পারবেন ১০-১২ হাজার দর্শক। টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ৫০, ১০০, ২০০ ও ৩০০ টাকা। টুর্নামেন্টের প্রেজেন্টিং স্পন্সর এবি ব্যাংক, আর কো-স্পন্সর হা-মীম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ ও ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

গ্যালারির সাজসজ্জায় টানা হয়েছে তুলির শেষ আঁচড়। গ্যালারির সামনে ফেন্সিং না থাকায় ২০১৪ সালের ২৪ অক্টোবর দর্শকের বাঁধভাঙা জোয়ারে যে কিছু দর্শক মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন, তা থেকে রক্ষা পেতেই ফেন্সিং বসানো হয়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে বরাবরই আশ্বস্ত করে আসছেন আয়োজকরা।

তবে প্রথমবারের মতো এত বড় একটি টুর্নামেন্টেও মাঠের অবস্থা বেহাল। সরেজমিন দেখা যায়, মাঠটি উঁচু-নিচু। কোথাও আবার ঘাসের পরিমাণ কম। মাটের ভেতর আছে দুটি ক্রিকেট পিচ। তাতে নতুন করে ঘাস লাগিয়ে ঢাকার চেষ্টা করা হলেও কতটুকু কাজে দেবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বল মাঠে গড়ানো পর্যন্ত। মাঠ প্রস্তুতির ব্যাপারে জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘মাঠটি মূলত ক্রিকেটের জন্য। পিচ তুলে এখন এটি ফুটবলের উপযোগী করা হচ্ছে।’

সাধারণ মানুষের উন্মাদনায় যশোর এখন পুরোটাই ফুটবল নগরী। রাস্তায় বের হলেই শোনা যাচ্ছে_ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ উপলক্ষে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত পৌর এলাকায় টেম্পো, নছিমন, ভটভটি নিষিদ্ধ। সবকিছুতেই যেন প্রত্যাশা, দর্শকদের বিশুদ্ধ ফুটবল কলরব।