মডেল মুন ও স্বামী কেলেংকারি
এস রহমান ; মডেল মুন ও তার কথিত স্বামী কেলেংকারি নিয়ে তোলপাড় চলছে। অবৈধভাবে পাঁচ কোটি টাকার দামি গাড়ি ব্যবহার করে আলোচনায় আসা মডেল জাকিয়া মুন ও তার কথিত স্বামী ব্যবসায়ী শফিউল আজম মহসিনকে তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
১৮ এপ্রিল বেলা সাড়ে ৩টায় কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে জাকিয়া মুন ও শফিউল আজম মহসিনকে বক্তব্য শুনতে তলব করা হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল মুন ও তার কথিত স্বামীকে সাত দিনের তলবি নোটিস পাঠিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ তলবি চিঠি পেয়ে নির্ধারিত সময়ে তারা হাজির হতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি। আর তারা যদি শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে হাজির হন, তাহলে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাওয়া হবে—কেন এই অবৈধ গাড়ি মডেল জাকিয়া মুন ব্যবহার করেছেন; শুল্ক ফাঁকির এই গাড়ি কেন কিনেছেন তার স্বামী।
একই সঙ্গে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, মুন ও তার কথিত স্বামী কেন আইন ভঙ্গ করেছেন। এসব প্রশ্নের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না হলে মডেল জাকিয়া মুন ও তার কথিত স্বামী প্যাসিফিক গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী শফিউল আজম মহসিনের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। একই সঙ্গে গাড়ি বাজেয়াপ্ত এবং তাদের ১২ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে। আবার তারা ফেঁসে যেতে পারেন চোরাচালান ও অর্থ পাচার মামলায়।
এর আগে ৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে টার্কিশ হোপ স্কুল-সংলগ্ন সাবেক সুন্দরী মিস বাংলাদেশ পরিচয় দানকারী জাকিয়া মুনের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া পোরশা মডেলের গাড়িটির মালিক তার কথিত স্বামী শফিউল আজম মহসিন। গাড়িটি উদ্ধারের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন মুন। মিথ্যা ঘোষণা ও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসা উদ্ধার হওয়া এ গাড়ি প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা জানিয়েছে, ব্রিটিশ রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে বাংলাদেশে আনা এ গাড়িটি দীর্ঘদিন নজরদারিতে রাখা হয়।
সূত্রমতে, পোরশা মডেলের আটক এ গাড়িটিতে হলুদ নম্বর প্লেট ছিল। যেখানে নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে—এসএফ ০৫ এইউএম। গাড়িটি উদ্ধারের সময় মুন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বাধা দেন। মিথ্যা ঘোষণা ও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনা গাড়িটি আটকের পর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, বিদেশি পর্যটকদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে গাড়ি আনার যে সুযোগ রয়েছে, তারই অপব্যবহার করে এসব দামি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু নিয়ম অনুসারে এসব গাড়ি পর্যটকদের জন্য ‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধায় বাংলাদেশে এনে আবার বাইরে ফেরত নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে দেশের ভেতর এসব গাড়ি ব্যবহার করে আসছেন অনেক ধনকুবের।