মওদুদের নাইকো দুর্নীতি-শুনানিতে বিব্রত হাইকোর্ট
হাইকোর্ট রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর জারি করা রুল শুনানিতে বিব্রত বোধ করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন।
গত ১১ ডিসেম্বর মওদুদের মামলায় হাইকোর্টের জারি করা রুল ১৯ জানুয়ারির মধ্যে নিস্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন আদালত। সেই রুল শুনানিতেই আজ বিব্রত করেন ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি।
নিয়মানুযায়ী, বিষয়টি এখন প্রধানর বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা রুলটি শুনানির জন্য নতুন কোন বেঞ্চে পাঠাবেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি করেন। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর মওদুদের নাইকো মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
তার করা এক ফৌজদারী রিভিশন আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে মওদুদের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, নাইকোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নাইকো-বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার মধ্যে ওয়াশিংটনের সালিশী আদালতে দুর্নীতির বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।
চলতি বছর ১৯ জুলাই সালিশী আদালত এক আদেশে সেখানে বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের আদালতে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলে। সালিশী আদালতের এই আদেশের প্রেক্ষিতে মামলা চলমান থাকায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি স্থগিত চান মওদুদ।
নিম্ন আদালতে গত ১৬ আগস্ট মওদুদের সেই আবেদন খারিজ করে দেন। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারী রিভিশন আবেদন করেন তিনি। আবেদনে ওয়াশিংটনের সালিশী আদালতের আদেশের কপি হাইকোর্টে তলবের আবেদনও করা হয়।
সেই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মওদুদের মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে তার আবেদন খারিজ করে দেওয়ার আদেশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক গত ৭ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ ১৯ জানুয়ারির মধ্যে রুল নিস্পত্তির নির্দেশ দেন।
গত ২৪ নভেম্বর একই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।