ভোটের ক্যামেরায় নায়কের মুখ!
লাবণ্য চৌধুরী : উপ নির্বাচনে সর্বশেষ রাজনীতির হাল দশা প্রতিফলিত হলো কি হিরো আলম কে ঘিরে? যেখানে হিরো আলম বলছিলেন, সদরের (বগুড়-৬ আসনের) কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাচে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। কাহালু-নন্দীগ্রামের এমপি হচ্চি!! হিরো আলম এর এমপি হওয়া আর না হওয়ার চেয়ে সে যে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তার একটা চিত্র ফুটে উঠেছে। হিরো আলম দেখিয়ে দিয়েছেন, সত্য বলতে এবং তা দেখিয়ে দিতে! হিরোকে ভোটের যুদ্ধে নামতে হাইকোর্ট পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছে। এখন হিরো আলমের কথা যদি সত্যি হয় তা হলে তো সোনায় সোহাগা! কারণ, হিরো আলম বলছিলেন, সদরের কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাচে, কাহালু-নন্দীগ্রামের এমপি হচ্চি!!
নিশ্চয়ই হিরো আলম একদিকে ভোটারদের সফলতার বার্তা দেখতে পেয়ে কথাগুলো বলেছেন। কাজেই ভোটাররা বলেছেন হিরো আলম থেকে বিএনপি কে শিক্ষা নিতে হবে। কারণ, ভোটাররা বলেছেন, লড়াই করতে হবে ভোটের মাঠে। যে ব্যবস্থা রাষ্ট্রে নেই সেটা নিয়ে সেটা নিয়ে মাঠ গরম না করে লড়াই না করে নিজেদের যোগ্যতা দেখাতে ভোটারদের কাছে যেতে হবে। ভোটাররা চাইলে বিএনপিও হিরো আলম হতে পারবে!
যদিও বগুড়া-৬ আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ কেন্দ্রে ডাকাত পড়েছে। অনেক কেন্দ্র থেকে ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হিরো আলম বলেন, সদরের (বগুড়-৬ আসনের) কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাচে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু হচ্ছে জানিয়ে হিরো আলম বলেন, কাহালু-নন্দীগামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকচি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামের নিশ্চিত এমপি হচ্চি।
হিরো আলমের বাড়ি বগুড়া সদরের এরুলিয়া পলিপাড়া গ্রামে। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া-৬ আসনের সদর উপজেলার এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। ভোট দেওয়ার পর হিরো আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় হিরো আলম বলেন, বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। আমার নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হব।
নানা শঙ্কার মধ্যেই বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও ৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ সকাল সাড়ে আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ইভিএমে টানা ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত।
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট বাদে অন্য এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকালে হিরো আলমসহ তিনজন প্রার্থী এ অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়।
বগুড়া-৬ আসনে আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মাসুদার রহমান অভিযোগ করেন, শহরের মিশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে নৌকার এজেন্ট ছাড়া অন্যদের এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। এ কেন্দ্রে আপেল প্রতীকের এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কেউ কোনো ভোটকক্ষ থেকে কাউকে বের করে দেননি।
বগুড়া-৬ আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ কেন্দ্রে ডাকাত পড়েছে। অনেক কেন্দ্র থেকে ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। রাজাপুর ইউনিয়ন, নুনগোলা ইউনিয়ন, শাখারিয়া ইউনিয়ন, মানিকচক উচ্চবিদ্যালয়, ভান্ডার পাইকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতশিমুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়, শহরের সিটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রসহ বহু কেন্দ্রে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।