• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভোটের আগে আলেমদের আর্শিবাদে প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ৫:২৮ পিএম, ৪ নভেম্বর ১৮ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩০৪ বার

 

এস রহমান : ভোটের আগে এবার কওমি আলেম-ওলামাদের আর্শিবাদ পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পেলেন ‘কওমি জননী’ উপাধি। কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দেয়ার সুবাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেলেন এই বিরল উপাধি। একই সময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে শুকরিয়ার স্মারক তুলে দিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা আহমদ শফী। তিনি বললেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অবদান ইতিহাসে ‘সোনালি অক্ষরে’ লেখা থাকবে।

এসময় আসন্ন নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আলেম-ওলামাদের দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতিতে রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি শিক্ষার্থী ও আলেম ওলামারা শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন প্রধান অতিথি। এতে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জানি সোশাল মিডিয়াতে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়। কাজেই এই অপপ্রচারে কেউ বিশ্বাস করবেন না।

অপপ্রচার বন্ধে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যে আমরা সাইবার ক্রাইম আইন তৈরি করেছি। কেউ যদি এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার করে, সাথে সাথে সেই আইন দ্বারা তাদের বিচার করা হবে, গ্রেপ্তার করা হবে।

ধর্মীয় বিষয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দিলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ধর্ম ইসলাম ধর্ম এবং নবী করিম (সা.) সম্পর্কে কেউ কোনো (অবমাননাকর) কথা বললে, আইন দ্বারাই তার বিচার হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নেব না। আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার করে উচিত শিক্ষা দিয়ে দেব, যাতে তারা কোনোভাবে এ ধরনের অপপ্রচার চালাতে না পারে।

হাতে গোনা কয়েকটি লোক ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ইসলাম ধর্মের ‘বদনাম দেয়’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধার বলেন, আমি যখনই কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাই, কেউ যদি বলে ইসলামিক টেররিস্ট, আমি সাথে সাথে প্রতিবাদ জানাই। আমি বলি, এটা বলতে পারবেন না। কারণ সবাই টেররিজমে বিশ্বাস করে না। বা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না।

যারা সন্ত্রাসী তাদের কোনো ধর্ম নাই। তাদের কোনো দেশ নেই, তাদের কোনো সমাজ নাই। তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী। যারা সত্যিকার ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে, তারা কখনো সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী হতে পারে না।প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শাস্তি বিঘ্নিত হোক তা আমরা চাই না। দেশে শান্তি থাকলেই উন্নতি হবে। উন্নতি থাকলে সবাই লাভবান হবে।

কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে সংসদে আইন পাস করায় প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে এ মাহফিলের আয়োজন করে কওমির ছয় বোর্ডের সমন্বিত সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ।

এ সংস্থার চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন প্রধান অতিথি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর তার হাতে শুকরিয়ার স্মারক তুলে দেন আহমদ শফী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অবদান ইতিহাসে ‘সোনালি অক্ষরে’ লেখা থাকবে।সনদের ওই স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন ওই সংস্থার সদস্য মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনি ‘কওমি জননী’। আপনি না থাকলে সাহাবা ও আলেম-ওলামাবিরোধী জামায়াত-মওদুদীবাদীরা এটা হতে দিতো না।আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশের আরেক সদস্য মওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আমাদের একজন আপনাকে ‘কওমি জননী’ বলেছেন। আপনি মায়ের দরদ দিয়ে ইমামদের পাঁচ হাজার টাকা, মুয়াজ্জিনদের তিন হাজার টাকা করে ভাতা দেবেন।আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ অনুষ্ঠানে কওমি আলেমদের সহযোগিতা চান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কওমি জননী হলে আপনারা কী? সন্তান। আপনারা সন্তান হলে সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি জননীর প্রতিও সন্তানদের দায়িত্ব রয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা চাই।কওমির আলেমদের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন এ মাহফিলে।