ভূমি প্রশাসনে নানা অনিয়ম সিন্ডিকেট জালিয়াতি এবং ডিজিটাল ভোগান্তি
এস রহমান : জমির কাগজপত্র সংরক্ষণে ত্রুটি, তথ্য সরবরাহে ভোগান্তি ও ভূমি প্রশাসনে অনিয়মের কারণে সারাদেশেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ- এমন মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। বিদ্যমান আইনের সংস্কার ও তথ্য সংরক্ষণে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ না করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব বলেও মনে করেন তারা।
অন্যদিকে, দলিল নিবন্ধন ও জরিপ অধিদপ্তরের আশ্বাস- ডিজিটাল পদ্ধতিতে দলিল, নকশা ও খতিয়ান সংরক্ষণের কার্যক্রম শুরু হলে সুবিধা পাবেন জনগণ।
ঝুঁকিমুক্ত ও সহজ উপায়ে তথ্য সরবরাহের লক্ষে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ও জরিপ অধিদপ্তর ২০১১ সালে দুটি প্রকল্প হাতে নেয়। নামজারিতে এসএমএস পদ্ধতি চালু হলেও তা সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে কয়েকটি পাইলট প্রকল্পতেই। তেমন এগোয়নি ডিজিটাল দলিল নিবন্ধন কার্যক্রমও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংরক্ষণ দুর্বলতা ও জবাবদিহি না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভুয়া দলিল ও নথিপত্র তৈরি করে আর্থিক অনিয়মের সুযোগ নেয়। মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লাগায় দীর্ঘমেয়াদী ভোগান্তিতে পড়েন জনগণ।
ভূমি বিশেষজ্ঞ শামসুল হুদা বলেন, ‘১০-১৫ বছর ধরে এই বিষয়গুলো আলোচনায় আছে। কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে খুব একটা এগিয়েছে সেটা আমার জানা নাই। ফৌজদারি এবং দেওয়ানির কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রায় ৮০ ভাগ মামলা ভূমি কেন্দ্রিক এবং তার একটা বড় কারণ হলো আমাদের রেকর্ড সংরক্ষণ পদ্ধতি, আইনি জটিলতা। ভূমি প্রশাসনের মধ্যে অনিয়ম ও নানা দুর্নীতি।
দেশের ৭টি জেলার ৪৫ টি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে আধুনিক পদ্ধতিতে নকশা ও খতিয়ান সংরক্ষণের কাজ। ২০১৭ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে সারাদেশে। এসব স্থানে কাগজপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তি কমার দাবি সংশ্লিষ্টদের।
জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতিরকন্ঠকে ‘ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামের একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৫ লাখ খতিয়ান এবং তার সংশ্লিষ্ট ১৮ হাজার মৌজা ম্যাপ স্ক্যানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ম্যাপগুলো ইতোমধ্যে স্ক্যান করা হয়ে গেছে এবং এই সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় একটি ডাটা সেন্টার স্থাপন করা হবে।’
ভূমি বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য, এ পদ্ধতিতে জটিলতা কমলেও প্রশাসনিক অনিয়ম না কমালে সুফল বঞ্চিত হতে পারেন জনগণ।