ভুয়া বিবৃতি-ইজ্জত পাংচারের পর সংলাপের জন্য মরিয়া বিএনপি
শফিক আজিজ.ঢাকা:
অমিত শাহ এবং তারেক রহমানের সহযোগীর ভুয়া বিবৃতি ইস্যুতে যখন বিএনপির ইজ্জত পাংচার তখন তাঁরা সংলাপের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দারা বলছেন, খালেদা জিয়া নিজে ইচ্ছাকৃতভাবে অফিসে অবস্থান করে প্যানিক সৃষ্ঠি করে নিজেকে অবরুদ্ধ দেখাচ্ছেন।আসলে এটা বিএনপির হীন কৌশল।এদিকে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি জনমনে সাড়া পড়লেও অমিত শাহ ও তারেক রহমানের সহযোগীর ভুয়া বিবৃতি ইস্যুতে বর্তমান বিএনপির ইজ্জত পাংচার অবস্থা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,এ অবস্থায় বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচির মত এখন সংলাপের জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কারণ দলটির ভুয়া বিবৃতি ইস্যু নিয়ে জনগনের আস্থা একেবারেই কমে গেছে।অনেক সাধারন মানুষ জাতিরকন্ঠে ফোন করে বলেছেন, খালেদা ও তারেকের ভাওতাবাজিতে বিএনপিকে আর বিশ্বাস করা যায় না।তাঁরা এত হীন মানসিকতা পোষণ করে জনগনের আস্থা আশা করে কি করে।যেখানে অমিত শাহ নিজে ফোন করে বলেছে, এটা একটা মিথ্যাচার, তিনি খালেদা জিয়াকে ফোন করেননি।
এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে রোববার রাতে দেখা করে বেরিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া সাংবাদিকদের জানান, সরকার সংলাপের উদ্যোগ না নেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যেতে চান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) আমাদের বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবির বিষয়ে সংলাপের উদ্যোগ সরকার না নেওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি আপনারা চালিয়ে যাবেন।নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সংলাপ অনুষ্ঠানের দাবি আওয়ামী লীগ নেতারা প্রত্যাখ্যান করে এলেও বিএনপি আশা করছে, সরকার অবস্থান বদলাবে। আমরা আশা করি, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। সঙ্কট সমাধানে খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেবেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় গত বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। ওই নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পর গত বছরের শেষে ৭ দফা দাবি জানান খালেদা।এরপর এই বছরের ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ কর্মসূচিতে বাধা পেয়ে লাগাতার অবরোধ ডাকেন খালেদা। তার দুদিন আগে থেকে গুলশানের ওই কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করা হয় তাকে।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিএনপির দাবিকে এখনও আমলে নিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী রোববারও সাংবাদিকদের প্রশ্নে সংলাপ ও আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করেন।গুলশানের কার্যালয়ে এক সপ্তাহ ধরে থাকা খালেদা রোববারই প্রথম দলের নীতি-নির্ধারকদের কয়েকজনকে কাছে পেলেন।
সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রফিকুলের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে ঢোকেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, জমিরউদ্দিন সরকার। তাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মদ আলী ও ফাহমিদা আখতার মুন্নীও ছিলেন।
সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, এভাবে তিনবারের একজন প্রধানমন্ত্রীকে বাসার বাইরে যেতে না দেওয়া আইনসিদ্ধ নয়। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না। সভা-সমাবেশে আমরা যা কিছু বলেছি, তা বক্তৃতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে, এর বাইরে কিছু নয়।
ভারতীয় জনতা পার্টির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহর সঙ্গে কথিত টেলিফোন আলাপের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রফিকুল বলেন, আমরা এ বিষয়ে ম্যাডামকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি (বেগম জিয়া) বলেছেন, উনার সঙ্গে কথা হয়েছে।সোমবার ঢাকায় আওয়ামী লীগকে সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি দেওয়ার সমালোচনাও করেন রফিকুল।উনারা সরকারে আছে, সভা-সমাবেশ করতে পারবে, আর আমরা পারব না, এটা কী ধরনের গণতন্ত্র? এখন এক ব্যক্তির শাসন চলছে।
খালেদা জিয়া আমাদের বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবির বিষয়ে সংলাপের উদ্যোগ সরকার না নেওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি আপনারা চালিয়ে যাবেন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সংলাপ অনুষ্ঠানের দাবি আওয়ামী লীগ নেতারা প্রত্যাখ্যান করে এলেও বিএনপি আশা করছে, সরকার অবস্থান বদলাবে।