• মঙ্গলবার , ১৯ নভেম্বর ২০২৪

ভুয়া এনআইডিতে রোহিঙ্গাদের হাতে সিম


প্রকাশিত: ১০:৩৮ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

টেকনাফ প্রতিনিধি  :  ভুয়া জাতীয় পরিচয় কিনে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে vvআসা রোহিঙ্গারা অবাধে মোবাইল ব্যবহার করছে। কয়েকটি মোবাইল কোম্পানিও সিম নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে না। টেকনাফ শহরের মুঠোফোনের সিম বিক্রির ধুম পড়েছে। রমরমা ব্যবসা চলছে মুঠোফোনের দোকানগুলোতে। এসব নতুন সিম কার্ড কিনছেন মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পার হয়ে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গারা। তাঁদের অনেকেই সঙ্গে করে ফোন সেট নিয়ে এসেছেন। আবার অনেকে এখান থেকেও নতুন ফোন কিনছেন। আর এর সঙ্গে কিনছেন বাংলাদেশি সিম কার্ড।

vvvvজানা গেছে, টেকনাফের মতো উখিয়াতেও সিম কার্ড বিক্রির রমরমা বাণিজ্য চলছে। গত কয়েক দিনে টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া, পুটিবুনিয়া, উখিয়ার কুতুপালং, বালখালি, থাইমখালি পুরুষদের প্রায় সবার কাছে এবং নারীদের অনেকের হাতে মুঠোফোন দেখা গেছে। তাঁরা এসব ফোনে কথাও বলছেন। এই দুই শহরে আসা কিছুটা আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের অনেককেই এখানে এসে বিশ্রাম নেওয়ার পরপরই মুঠোফোনের দোকানে চলে যেতে দেখা যায়।

এবার আসা একাধিক শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছ, তাঁরা স্থানীয় আত্মীয়দের মাধ্যমে এগুলো কিনছেন। আবদুল করিম টেকনাফের একটি মুঠোফোন কোম্পানির পরিবেশক ও টেকনাফ বাসস্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রথম বলেন, ‘কয়েকটি মুঠোফোন কোম্পানি মাইকিং করে মেলার নামে সিম বিক্রি করছে। এসব সিম কেনার জন্য মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। তারা জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই সিম বিক্রি করছে। এখনই এসব বন্ধ করা প্রয়োজন।
vvv
টেকনাফে সিম বিক্রির ছোট-বড় দোকান আছে প্রায় ১৫০টি। এ ছাড়া পথের ধারে টুল নিয়েও অনেকে সিম বিক্রির কারবারে বসে গেছেন। নিয়ম অনুসারে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া সেলফোনের সিম কেনা যায় না। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। দোকানগুলোতে এ ধরনের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করাই আছে। চাইলেই যেকোনো কোম্পানির সিম কেনা যাচ্ছে। আবার অনেক নতুন আসা রোহিঙ্গা তাদের পরিচিত পুরোনো রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে সিম কার্ড কিনছেন।

গত ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরুর পর থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রত্যেক তরুণ, বয়স্ক পুরুষ এবং অনেক নারীর হাতেও মুঠোফোন রয়েছে। প্রায়ই তাঁদের ফোনে আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে দেখা যাচ্ছে। নতুন আসা এই ছয় লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে অন্তত এক-চতুর্থাংশও বাংলাদেশি নতুন সিম কার্ড কিনলে রোহিঙ্গাদের হাতে সিমের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দেড় লাখ।
yyy
আরও কম ধরলে অন্তত এক লাখ নতুন সিম কিনেছেন রোহিঙ্গারা। এর অধিকাংশই অনিবন্ধিত বা ভুয়া আইডি নম্বরে কেনা সিম বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, বৈধ পদ্ধতিতে নতুন রোহিঙ্গাদের সেলফোনের সিম কার্ড কেনার কোনো সুযোগ নেই।
তবে বিক্রেতার দাবি করছেন, তাঁরা এনআইডির ফটোকপি নিদেনপক্ষে এনআইডি নম্বর না হলে সিম বিক্রি করছেন না। যাঁরা নম্বর নিয়ে আসছেন, তাঁদের কাছেই কেবল তারা সিম বিক্রি করছেন।

নতুন আসা রোহিঙ্গারা পুরোনোদের সহায়তা নিয়ে বা এখানে থাকা তাদের পরিচিত ব্যক্তিদের সাহায্য নিয়ে এসব সিম কিনছেন বলে বিক্রেতারা দাবি করছেন। তবে সিম বিক্রি বেড়েছে এ কথা স্বীকার করছেন সবাই।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক এবং টেকনাফ-২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর শরিফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, রোহিঙ্গাদের নতুন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনের সময় তাঁরা অনেকের হাতে সেলফোন দেখেছেন। অনেককে কথা বলতেও দেখেছেন। তবে রোহিঙ্গারা কীভাবে এসব সেলফোনের সিম সংগ্রহ করেছেন, সে বিষয়ে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

এখন কক্সবাজারে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন চলছে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এ কাজ করছে। প্রকল্পটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের হাতে অনিবন্ধিত সিম থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর ফলে আমাদের কাজে অসুবিধা সৃষ্টি হবে।