‘ভুয়া পিতা’র জমজমাট ব্যবসা
জার্মানী থেকে নীরু ফার্নান্দেজ : ‘ভুয়া পিতা’র জমজমাট ব্যবসা চলছে জার্মানীতে। জার্মানির কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে গর্ভবতী অভিবাসী নারীরা স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতা অর্জনের জন্য এ অভিনব উপায় বের করেছে। সেসব নারীদের অনাগত সন্তানের ‘ভুয়া পিতা’ বানানো হচ্ছে জার্মান পুরুষদের
এবং সেজন্য তাদের মোটা অঙ্কের টাকাও দিচ্ছেন সেসব অভিবাসী নারীরা। আর এর সংখ্যাটাও কম নয়। জার্মান সম্প্রচার মাধ্যম আরবিবি তাদের এক অনুসন্ধানে দেখেছে বার্লিনেই এমন ৭০০টি ঘটনা রয়েছে।এছাড়াও লোকচক্ষুর আড়ালেও রয়েছে অনেক কেইস – বলছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ওলে স্ক্রোডার।
ভিয়েতনাম, আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপের বহু অভিবাসী নারী আছেন যারা জার্মানিতে আশ্রয় প্রার্থনা করে আবেদন করেছেন। ভুয়া পিতা বা অভিভাবক বানানোর এই প্রবণতা মোকাবেলা করার জন্য নতুন একটি আইনের খসড়াও অনুমোদন দেয়া হয়েছে- আরবিবি’র প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে যেসব অভিবাসী নারী গর্ভবতী তারা তাদের সন্তানের ‘ভুয়া পিতা’ বানানোর জন্য পাঁচ হাজার ইউরো পর্যন্ত খরচ করছেন। একবার যদি ওই সন্তানের নাম রেজিস্টার হয়ে যায় তাহলে সে জার্মান নাগরিক এবং সেই সাথে ওই শিশুর মাও জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। তবে আফ্রিকা, এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসীদের তুলনায় শরণার্থীরা জার্মানিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ সহজেই পেয়ে যান।
জার্মানিতে শরণার্থীদেরেআশ্রয় দেবার রীতিনীতি কিছুটা শক্ত করা হয় ২০১৫ সালে। সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে প্রায় আট লাখ শরণার্থী জার্মানিতে আশ্রয় নেয় সেসময়। যদিও অভিবাসন রীতিতে একটু কড়াকড়ি জারি করার পর ২০১৬ সালে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমে যায়। সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের আগে জার্মানিতে অভিবাসন ইস্যুটি একটি বড় ইস্যু ।
জনমত জরিপে দেখা গেছে ন্যাশনালিস্ট অলটারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি, যে দলটি ব্যাপক অভিবাসনের বিরোধিতা করে আসছে- সে দলটি জনগণের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে। মি: স্ক্রোডার বলছেন অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা অনেক এমন ঘটনার প্রমাণ পাচ্ছি যে ‘ভুয়া পিতা’ হয়ে অনেক টাকা উপার্জন করে নিচ্ছে। এটা আসলে একধরনের অপরাধ, কোনভাবে এটা সমর্থন করা যায় না।
এমনকি টাকার বিনিময়ে ‘ভুয়া পিতা’ হয়ে এক ব্যক্তি অনেক টাকাও উপার্জন করে নিচ্ছেন।এআরডি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকার আইনজীবী মার্টিন স্টেল্টনার বলেছেন, অনেকে এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে নিচ্ছেন। তিনি এক ব্যক্তিকে পেয়েছেন যিনি নিজেকে ১০ সন্তানের বাবা বলে দাবি করছেন।