ভারতীয় চ্যানেল নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর
সচিবালয় রিপোর্টার :
বাংলাদেশে ভারতের টিভি চ্যানেল সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) পাঠানো চিঠিতে মন্ত্রী এমন সুপারিশ করেন।
চিঠিতে ভারতের চ্যানেল বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণের জন্য অর্থমন্ত্রী দুটি প্রস্তাব করেন। একটি হচ্ছে, ভারতের চ্যানেল বাংলাদেশে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ কোটি টাকা ফি আদায়। অন্যটি হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রচারিত ৪০টি চ্যানেলের পর ভারতের টিভি চ্যানেল রাখার ব্যবস্থা নেওয়া।
চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের টেলিভিশন বাংলাদেশে বিনা পয়সায় দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো টেলিভিশনের অনুষ্ঠান ভারতে দেখা যায় না। এ ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেও কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত বলেছে, এ ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই। যেহেতু কেবল টিভি প্রদর্শন করার অধিকার শুধু বেসরকারি খাতে রয়েছে।’ ভারতের টিভি চ্যানেলগুলো ক্রমানুসারে যাতে আগে দেখা না যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্ট কেবল অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেহেতু ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে দেখা যায়; সে কারণে সেখানকার অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের কথা মাথায় রেখে বিজ্ঞাপন প্রচার করে। এর ফলে ভারতের পণ্যের ব্যবসা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এখান থেকে কোনোভাবে লাভবান হয় না।
অর্থমন্ত্রীর সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে কেবল অপারেটর মালিকদের সংগঠনের (কোয়াব) সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ভারতে আমাদের দেশের চ্যানেল দেখা যায় না, এটা অবশ্যই একটি সমস্যা। আমরাও চাই, এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। কিন্তু সেটা যেন কিছুটা সহজ শর্তে হয়, সে বিষয়টি সরকারকে ভেবে দেখতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ হিসেবে তথ্য, বাণিজ্য ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি থাকলেও এদের কাজে কোনো সমন্বয় নেই। এ বিষয়ে তিনি এই কর্তৃপক্ষগুলোকে নিজেদের কাজ স্পষ্টভাবে নির্ধারণ এবং সমন্বয় করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যসচিব মর্তুজা আহমেদ অর্থমন্ত্রীর পাঠানো চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে বিটিআরসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, অর্থমন্ত্রীর চিঠি তাঁদের কাছেও গেছে। এ বিষয়ে কাজ চলছে। বাস্তবতা বিচার করে বিটিআরসি এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।