• মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিন উধাও কে তুলে নিয়ে গেল তাঁকে?


প্রকাশিত: ২:৪৫ পিএম, ১৬ নভেম্বর ১৫ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৮ বার

Saifuddin-lalbag-www.jatirkhantha.com.bdবিশেষ প্রতিবেদক:   ব্যবসায়ী মো. সাইফুদ্দিন উধাও রহস্য নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজধানীতে।রাজধানীর লালবাগের শহীদ নগরের নিজ বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ গোয়েন্দা পরিচয়ধারী লোকজন।কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে তার কোন খোঁজ নেই।সবাই বলছে তারা এ সম্পর্কে কিছুই জানেনা।

ব্যবসায়ীর স্বজনরা জানায়, ২৮ অক্টোবর, সকাল ৭ টায় লালবাগের শহীদ নগরে ব্যবসায়ী মো. সাইফুদ্দিনের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় তিনটি মাইক্রোবাস। গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজন বাসার ভেতরে ঢোকেন। আর কেউ গাড়ির আশপাশে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
যাঁরা বাসার ভেতর ঢোকেন তারা নিজেদের র‍্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করে ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিনকে বাসার ভেতর থেকে টেনে হিঁচড়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলেন। এরপর কেটে গেছে প্রায় তিন সপ্তাহ।কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনীই খোঁজ দিতে পারছেন না। পুলিশ, র‍্যাব বলছে এ ধরনের কোনো অভিযানই তাঁরা পরিচালনা করেননি।

আর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সাইফুদ্দিনের কোনো ব্যবসায়িক শত্রু নেই। এমন কেউ নেই যার সঙ্গে তাঁর বিবাদ ছিল। তাঁকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কোনো কারণও তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
পরিবারের প্রধান ব্যক্তির খোঁজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেছেন কিন্তু নিখোঁজ এই ব্যবসায়ীকে পাওয়া যাচ্ছে না।

লালবাগ থানার  ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, তাঁরা নিখোঁজের বিষয়টি অবগত। সাধ্য মতো সব জায়গায় খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কারা, কেন তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে সে সম্পর্কে পুলিশ কিছু জানতে পারেনি।ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁদের গোটা পরিবারে মুষড়ে পড়েছে। তাঁর মা ও স্ত্রী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন বিছানায়। সাইফুদ্দিনের চার সন্তান। এর মধ্যে দুই যমজ ছেলে মেয়ের বয়স আট মাস। আরও দুই সন্তান, মেয়ের বয়স ৯ বছর আর ছেলের বয়স ৪ বছর।

সাইফুদ্দিনের ছোট ভাই আলাউদ্দিন বলেন, তাঁর ভাই লালবাগে মেসার্স বিসমিল্লাহ মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। গত ২৮ অক্টোবর সকাল সাতটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লালবাগের শহীদনগরের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারা নিজেদের র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দেন।

আলাউদ্দিন বলেন, তাঁর ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দিন তিনটি মাইক্রোবাসে করে ২০-২২ জন এসেছিলেন। তাঁদের কাছে হাত কড়া ছিল ও পরিচয়পত্রও ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তাঁর ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই এলাকার অনেক মানুষ জড় হলে কথিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধমক দেন। তুলে নেওয়ার পর থেকে সাইফুদ্দিনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, তাঁরা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলেনি। লালবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীই বলছে, তারা কোনো অভিযান চালাননি। আলাউদ্দিন অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁদের ঠিকমতো সহায়তা করছে না। অবশ্য লালবাগ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেছেন এই অভিযোগ ঠিক না। কেননা পরিবার শুধু থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। মামলা করলে বিষয়টি আরও ভালো করে খোঁজ নেওয়া হবে।