• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বোরকা পরে আগুন দিয়েছিল জোবায়ের


প্রকাশিত: ৬:৪১ পিএম, ২১ এপ্রিল ১৯ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৪৩ বার

 

ফেনী প্রতিনিধি : নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে ম্যাচের কাঠি ঠুকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল সাইফুর রহমান জোবায়ের। রবিবার (২১ এপ্রিল) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জোবায়ের এ কথা স্বীকার করেছে। ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহম্মদের আদালত বিকালে এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল। তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে জোবায়ের। এই হত্যার বিষয়ে সে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। কিন্তু মামলার তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাচ্ছে না।’

জোবায়ের নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গত ১০ এপ্রিল তাকে সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১১ এপ্রিল আদালত তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেয়। সে নুসরাতের সহপাঠী ছিল এবং সোনাগাজী পৌর শহরের আবুল বাশারের ছেলে।মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে জোবায়েরের কথা। শামীম স্বীকারোক্তিতে জানায়, নুসরাতকে মেঝেতে শোয়ায়ে ফেলার পর, তার ওড়না দুই টুকরা করে হাত-পা বেঁধে ফেলে জোবায়ের।

এদিকে, শনিবার (২০ এপ্রিল) জোবায়েরকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পিবিআই সদস্যরা। তারা সেখানকার একটি খাল থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত বোরকা উদ্ধার করেছে।এর আগে এই মামলার সাতজন আসামি নুসরাত হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলো- নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি ও জাবেদ হোসেন।

নুসরাত হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আটজনসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তারা হলো—মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ্দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, সাইফুর রহমান জোবায়ের, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও এমরান হোসেন মামুন।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।