বোধোদয় খালেদা জিয়ার!এবার ১৫ আগস্ট ঘটা করে জন্মদিনে না?
এস রহমান : বোধোদয় হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার! এবার ঘটা করে জন্মদিন হচ্ছেনা। এমনটাই জানালেন তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সম্মান জানাতে এবার ই প্রথম খালেদা জিয়া তাঁর জন্মদিন পালন না করতে পারেন?
এর আগে ১৯৯৩ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীর মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন করা শুরু করেন।এরপর থেকে বিএনপি বুদ্ধিজীবীরা এটা পালন করার জন্যে তাকে বার বার উদ্ধুদ্ধ করে আসছিলেন।
বিএনপি ঘনিষ্ঠজনরা জাতিরকন্ঠকে জানিয়েছেন, এ বছর ১৫ আগস্ট কেক কেটে জাঁকজমক করে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠান নাও করতে পারেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দেশের চলমান ‘সংকট’ ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে খালেদা জিয়া এবার জন্মদিন
সূত্র মতে, দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ নিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন আলোচনা করেছেন। তবে দলের পক্ষ থেকে জন্মদিন উদ্যাপন না করার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। কিন্তু দলের বিভিন্ন সহযোগী, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কেক নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেই ১৫ আগস্টে খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদ্যাপন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক আছে।
খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৩ সালের ১৫ আগস্ট জন্মদিন উদ্যাপন শুরু করেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের গঠনের পর ১৯৯৩ সাল থেকে তবে তা ছিল ঘরোয়াভাবে ও অনাড়ম্বরভাবে। বিএনপি ক্ষমতা হারিয়ে বিরোধী দলে যাওয়ার পর ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিনটিতে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন শুরু হয়।
১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীর মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন করা শুরু করেন। সে সময়ের একজন যুবদল নেতা ও কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে এ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় বলে বিএনপির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন।
এরপর থেকে প্রতিবছর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা নেওয়া কেক ১৫ আগস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে কাটেন খালেদা জিয়া। এবার বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েকটি সংগঠনকে কেক বা ফুল নিয়ে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এবার দেশের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এবং বিএনপির নেতা-কর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, এসব বিবেচনা করে এবার তাঁদের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কেক বা ফুল নিয়ে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য গত বছর প্রথম ক্ষণে কেক না কাটলেও ১৫ আগস্ট রাত নয়টার দিকে একাধিক কেক কেটেছিলেন খালেদা জিয়া। গুলশানে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়েও এই উপলক্ষে বিশেষ আলোকসজ্জা করা হয়েছিল।
তবে এবার খালেদা জিয়ার জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা না করলেও বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারে বলে জানা গেছে। তবে সেটিও অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণ হবে না বলে জানা গেছে।
১৯৯১ সালের ২০ মার্চ খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সরকারিভাবে গণমাধ্যমে তাঁর যে জীবনবৃত্তান্ত পাঠানো হয়েছিল, তা ২১ মার্চ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোন করেছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে। এই টেলিফোন সংলাপের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদ্যাপন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সম্প্রতি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীও খালেদা জিয়াকে ১৫ আগস্ট তাঁর প্রকৃত জন্মদিন হলেও তা উদ্যাপন না করার আহ্বান জানান।