• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

বেনজিরের ডুপ্লেক্স ক্রোক


প্রকাশিত: ৭:০৭ পিএম, ৬ জুলাই ২৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৯ বার

নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নারায়গনগঞ্জ ডিসি –

 

রুপগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের একটি বাংলো জব্দ করা হয়েছে৷শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসন ও দুদকের সমন্বয়ে এক অভিযানে বাংলোটি জব্দ করা হয়৷ এর ফটকে ‘ক্রোক বিজ্ঞপ্তি’ লেখা সম্বলিত একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দিয়েছে প্রশাসন৷এর আগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সাবেক এ আইজিপির সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত৷

এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুর আলম৷ এ সময় দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মইনুল হাসান রওশনী উপস্থিত ছিলেন৷শফিকুর সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকার স্পেশাল জজ আদালতের নির্দেশে সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে সম্পত্তিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা এ সম্পত্তি আজ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি৷

জেলা প্রশাসন ও দুদকের সমন্বিত দলটি রিসোর্টের ভেতরটা ঘুরে দেখলেও ভবনটি ‘ডিজিটাল লক’ পদ্ধতিতে বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।শফিকুর আলম বলেন, “এখানে একটি দোতলা ভবন, কিছু কুকুর ও পাখি রয়েছে৷ ভবনটি ডিজিটাল লক সিস্টেমে বন্ধ আছে৷ এটি খুলতে উপযুক্ত টেকনেশিয়ান ও যন্ত্রপাতি না থাকায় আমরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি৷”

এ সম্পত্তি কী করা হবে তা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে৷ আপাতত এ রিসোর্ট দেখাশোনার জন্য যে দুজন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন তারা সোমবার পর্যন্ত এখানেই থাকবেন বলেও জানান জেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা৷পূর্বাচলের দক্ষিণবাগ এলাকায় গুতিয়াব মৌজায় পুলিশের আনন্দ হাউজিং সোসাইটির ছয়টি প্লটের ২৪ কাঠা জমির উপর সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে এ রিসোর্টটি নির্মাণ করা হয়েছে৷

চারপাশে কাঁটাতারসহ সীমানা দেয়াল দেওয়া রিসোর্টের ভেতরে একটি বিলাসবহুল ‘ডুপ্লেক্স বাড়ি’ রয়েছে৷ প্রশাসনের সাঁটানো ‘ক্রোক বিজ্ঞপ্তিতে’ রিসোর্টটির মালিক হিসেবে বেনজীরের কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নাম উল্লেখ রয়েছে৷স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণবাগ এলাকার একটি হিন্দু পরিবারের কাছ থেকে এ জমিটি আনন্দ হাউজিং সোসাইটির নামে কেনা হয়েছিল৷ পরে এ জমিতে বেনজীর ডুপ্লেক্স বাড়িটি নির্মাণ করেন৷ প্রায় সময় এ বাড়িতে আত্মীয়-বন্ধুদের নিয়ে আসতেন বেনজীর আহমেদ৷

তবে, তিন মাস ধরে কেউ আসেন না বলে জানান বাড়িটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা রতন মিয়া৷ ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাসিন্দা রতনের শ্বশুরবাড়ি গুতিয়াব এলাকায়৷ বাড়িটির ফটকের ভেতর একটি ছোট কক্ষে থাকেন তিনি৷রতন বলেন, আগে তার (বেনজীর আহমেদ) পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা এখানে আসতেন, থাকতেন৷ কিন্তু গত তিন মাস কেউ আসেন না৷ বাড়িটি বন্ধই থাকে৷ আমরা দুজন সামনের ছোট্ট ঘরটাতে থাকি৷ ভবনটির ভেতরে ঢোকার পারমিশন আমাদের নেই৷

ডেমরা-ইছাপুরা সড়কের পাশে বেনজীরের এ রিসোর্টের জমির আগের মালিক প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের ছেলে রামধন সরকার বলেন, প্রেমানন্দ সরকারের মৃত্যুর পর তাদের চার ভাই এ জমির মালিক হন৷ অন্তত ১০ বছর আগে বালু দিয়ে জমিটি ভরাট করে পুলিশের আনন্দ হাউজিং সোসাইটি৷ পরবর্তীতে এক কোটি টাকা বিঘা দরে ৫৫ শতাংশ জমি কিনে নেওয়া হয়৷আমরা তো এ জমি বিক্রি করতে চাইনি৷ বালু ভরাটের সময়ও বাধা দিছিলাম৷ কিন্তু তাগো লগে কী আর পারা যায়৷ পরে উপায় না দেইখা বিক্রি কইরা দিছি৷ ওই জমিতেই পরে বাড়ি করেন বেনজীর৷

সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠার পর গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কটি আদালতের নির্দেশে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।এ ছাড়া বান্দরবানে বেনজীর ও তার মেয়ের নামে ২৫ একর জমিতে পুকুর, বাগান ও খামার বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেখানকার প্রশাসন।