• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যা নয় আত্মহত্যা করেছে : র‍্যাব


প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২২ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৪৪ বার

স্টাফ রিপোর্টার : বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং-এ একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পাওয়ার কথা জানালো র‍্যাব। বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ স্বেচ্ছায় ডেমরা সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এসময় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বিকাল তিনটায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়ায় নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশ্যে বের হয় ফারদিন। বিকাল আনুমানিক পাঁচটায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এক পরিচিতার সাথে তিনি দেখা করেন। এরপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় ফারদিনকে। পরে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করেন ফারদিন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাত আনুমানিক আটটায় ফারদিনকে টিএসসি ও তার আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

আনুমানিক রাত দশটায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিক্সা থেকে নেমে যান এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় যান।সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, রাত দুটোয় যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা থেকে ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক দুইটা বিশ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যান ফারদিন।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, রাত দুইটা ছাব্বিশ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিন অবস্থান করছিলেন। এরপর রাত ২:৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসেন ফারদিন। উল্লেখ্য যে, ব্রিজের তারাবো প্রান্ত হতে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দুরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার।

রাত ২:৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে যান ফারদিন। রাত ২:৩৫ মিনিটে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এবং রাত ২:৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

র‍্যাব জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সকল সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ হতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে।র‍্যাব বলছে, এ ঘটনার তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ গত ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের দুদিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।এ ঘটনায় রাজধানীর রামপুরা থানায় গত ৯ নভেম্বর রাতে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় বুশরা নামে ফারদিনের এক বান্ধবীসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।

ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার নয়ামাটিতে। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন ছিলেন সবার বড়। তার মেজ ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।