বুধবার সততা স্টোর চালু হচ্ছে তরুণদের সৎ হবার জন্যে-
এস রহমান : তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও ন্যায়পরায়ণ মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্রেতাহীন সততা স্টোরের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামিকাল (বুধবার) নরসিংদী সদর উপজেলার আইডিয়াল মাধ্যমিক স্কুল ক্যাম্পাসে এ ‘সততা স্টোর’ উদ্বোধনের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ওই বিক্রেতাহীন দোকানের উদ্বোধন করবেন।
এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জাতিরকন্ঠকে বলেন, ‘আগামিকাল সকালে দুদক কমিশনার নরসিংদীর আইডিয়াল মাধ্যমিক স্কুলে সততা স্টোরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রতিটি স্কুলে এ ধরণের স্টোর চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
প্রাথমিকভাবে দেশের প্রতিটি জেলার একটি উপজেলায় একটি বালিকা বিদ্যালয় ও একটি বালক বিদ্যালয়ে এই স্টোর স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে দুদক। যেখানে কোনো বিক্রেতা ছাড়াই দোকানে খাতা, কলম, পেন্সিল, ইরেজার, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, রং পেন্সিল, চিপস, বিস্কুট ইত্যাদি পণ্য বিক্রি হবে। আর ক্রেতারা তালিকা মূল্য দেখে পণ্য ক্রয় করে দোকানের নির্ধারিত বাক্সে টাকা রাখবেন। সব পণ্যের দাম হবে বাজারমূল্যের সমান।
স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সততাবোধ সৃষ্টিতে দুদক দোকানের নাম ‘সততা স্টোর’ রেখেছে। ইতিমধ্যে সততা স্টোর স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দুদক থেকে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে স্টোরের প্রাথমিক পুঁজি সংগ্রহ করবে।
সততা স্টোরে পণ্য ক্রয়ের নিয়মাবলীর বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, সততা স্টোরে প্রবেশের সময়ে রেজিস্ট্রর খাতায় নাম, শ্রেণি ও রোল নম্বর লিখতে হবে। এরপর পণ্যের মূল্য তালিকা দেখে যেসব পণ্য ক্রয় করা হবে তার মূল্য সততা স্টোরে রক্ষিত ক্যালকুলেটরে হিসেব করে পরিশোধ করা হবে।
ক্রেতা ছাত্রছাত্রীকে একটি কাগজে পণ্যের নাম ও টাকার পরিমাণ লিখে পণ্যের দামসহ টেবিলে রাখা খামে ভরে নির্ধারিত ক্যাশবাক্সে ফেলতে হবে। যদি চাহিদামতো পণ্য না পাওয়া যায় তবে তা প্রি-অর্ডার বুকে লিখে অর্ডার দেওয়া যাবে।
সততা স্টোর পরিচালনার বিষয়ে নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ও মহানগর/জেলা/উপজেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বা সম্পাদক কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে এ স্টোর পরিচালনা করা হবে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটি নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মনোনীত তিন জন শিক্ষকের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এ স্টোর পরিচালনা করবেন।
সততা স্টোরটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সমন্বয়ে তিন সদস্যের গঠিত বিশেষ মনিটরিং কমিটি মনিটর করবে। ওই মনিটরিং কমিটি প্রতিমাসে অন্তত একবার বৈঠক করে হিসাব-নিকাশ যাচাই ও ক্রয়যোগ্য সামগ্রীর তালিকা করে প্রয়োজনীয় অর্থ স্টোর পরিচালনা কমিটির কাছে দেবে।
এ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা চাই শিশুদের মধ্যে সততার চর্চা হোক। এটা অভ্যাসের বিষয়। শিশুদের মধ্যে সততার অভ্যাস গড়তে আমাদের এ উদ্যোগ। আশা করছি এটা করতে পারলে শিশুদের মধ্যে ভালো অভ্যাস গড়ে উঠবে।