• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিপুল ভোটে বিজয়ী হাবিব-জয়


প্রকাশিত: ২:১৫ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৭২ বার

স্টাফ রিপোর্টার : বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। যদিও তাঁদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দুই প্রার্থী এই নির্বাচনে জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। দুটি আসনের মধ্যে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিব হাসান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৮২০ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৬৯ ভোট।আজ বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন এ ফলাফল ঘোষণা করেন।নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মো. নাসির উদ্দিন সরকার লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পান ৩২৫ ভোট। গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ মাছ প্রতীক নিয়ে পান ১২৬ ভোট। বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ওমর ফারুক ডাব প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯১ ভোট। আর প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মো. মহিববুল্লা বাহার বাঘ প্রতীক নিয়ে ৮৭ ভোট পেয়েছেন।

নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার ১১৬ জন। ২১৭টি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ৮১ হাজার ৮১৮ জন। সব ভোটই বৈধ হয়েছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন। নির্বাচনে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ ভোট পড়ে।এই দুই উপনির্বাচনে সকালবেলায় ভোটার উপস্থিতি বেশ কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে। তবে তা তুলনামূলকভাবে কমই ছিল। উপনির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম দেখা গেছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়।

ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সকালে ভোট দেওয়ার পর অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর লোকজন প্রতিটি কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এ ভোট সুষ্ঠু হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।’যদিও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ হাবিব হাসান। তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেছেন, ‘নির্বাচন এলেই বিএনপি এ ধরনের অভিযোগ করে। এখানে সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।’

দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। ভোট দেওয়ার পর তিনি নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে বুথ পর্যবেক্ষণ করেন এবং ভোটারদের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ভোটগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চার-পাঁচ দিনেও ভোট গণনা শেষ করতে পারে না। আর আমরা ইভিএমে চার-পাঁচ মিনিটে ফল ঘোষণা করে দিতে পারি। যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের থেকে শিক্ষাদীক্ষা নেওয়া উচিত।আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন গত ৯ জুলাই মারা যাওয়ায় ঢাকা-১৮ আসন শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর এ আসনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর শাকিল জয়। আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ ফল ঘোষণা করা হয়।জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন ফল ঘোষণা করে জানান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর শাকিল জয় নৌকা প্রতীক নিয়ে এক লাখ ৮৮ হাজার ৩২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৬৮টি ভোট।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গত ১৩ জুন মারা গেলে সিরাজগঞ্জ-১ আসন শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর এ আসনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। আওয়ামী লীগ এ আসনে মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়কে মনোনয়ন দেয়। তিনি এর আগে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তানভীর শাকিল জয় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় চার নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলীর নাতি। সিরাজগঞ্জ-১ আসনটি বেশির ভাগ সময়ই ছিল এই পরিবারের কাছে। এ আসনে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, ১৯৮৬ সালে তাঁর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম, ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র প্রাথী শফিকুল ইসলাম মাস্টার, ১৯৯১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ নাসিম, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তানভীর শাকিল জয় ও ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত মোহাম্মদ নাসিম সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।কাজীপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন, সদর উপজেলার চারটি ও একটি পৌরসভা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-১ আসনটি গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৪ জন। ১৭১টি কেন্দ্রে ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।