বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও আইটিইউ পুরস্কারে ভূষিত শেখ হাসিনাকে বিপুল সম্বর্ধনা বাংলাদেশে
এস রহমান.ঢাকা: বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও আইটিইউ পুরস্কারে ভূষিত শেখ হাসিনাকে বিপুল সম্বর্ধনা বাংলাদেশে ।জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে যুক্তরাজ্য হয়ে দেশে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটটি সিলেটে যাত্রাবিরতির পর শনিবার দুপুর ১টায় হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়।‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ ও ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পাওয়ায় শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি আগেই নিয়েছিল তার দল আওয়ামী লীগ।এই সংবর্ধনার অংশ হিসেবে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা।
বাদক দল নিয়ে অবস্থানকারী এই নেতা-কর্মীদের হাতে রয়েছে শেখ হাসিনার নামে স্লোগান, হাতে রয়েছে অভিনন্দনবাণী সম্বলিত প্ল্যাকার্ড -ফেস্টুন।বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
সিলেটে যাত্রাবিরতির সময় স্থানীয় তিন সংসদ সদস্য এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।সংসদ সদস্যরা হলেন- ইমরান আহমেদ, মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস ও কেয়া চৌধুরী। জেলা ও নগর নেতাদের মধ্যে ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমেদ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ‘বিচক্ষণ নেতৃত্বের’ স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অফ দ্যা আর্থ’ এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পুরস্কার এবার গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনা।জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।গত ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। তিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের এক হওয়ার আহবান জানান।
আইটিইউ’র ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৬ সেপ্টেম্বর সংস্থার মহাসচিব হাউলিন ঝাও শেখ হাসিনার হাতে ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ তুলে দেন।তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা (আইটিইউ) বাংলাদেশকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে।পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক অ্যাচিম স্টেইনার নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কার পেলেন শেখ হাসিনা। এর আগে বাংলাদেশের পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমান এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা।জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক আরও একটি আলোচনার উদ্বোধনী অধিবেশনেও কো-চেয়ার হন প্রধানমন্ত্রী। ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে ‘মেধাস্বত্ব আইন’ পর্যালোচনার আহ্বান জানান তিনি।
একইদিন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সম্মেলন কেন্দ্রে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ে এক গোলটেবিল আলোচনাতেও অংশ নেন।২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের এক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। ২৯ সেপ্টেম্বর এমডিজি ও এসডিজি বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায়ও বক্তব্য রাখেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন।সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।