বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের জমি জালিয়াতি দখলবাজি ফাঁস
এস রহমান : বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের জমি জালিয়াতি দখলবাজি ফাঁস হয়েছে অবশেষে। পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত গুলশানের বিশাল বাড়িটি নিজের ভাইয়ের নামে হাতিয়ে নিয়েছিল মওদুদ আহমদ। কিন্তু ঘটনাচক্রে তা ফাঁস হয়ে যায়। এরপর এনিয়ে মামলা হলে সেখানেও হেরে যায় মওদুদ।এরপরও তিনি বাড়ি ছাড়ছিলেন না। শেষমেষ সরকার হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন পাকিস্তানি নাগরিক মোঃ এহসান। তাঁরা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। এর পর ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট মওদুদ তাঁর ইংল্যান্ড প্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করে দুদক।
দুদক জানায়, গত ৪ জুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়ির মালিকানা বিষয়ে করা রিভিউ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।গত বছর ২ আগস্ট মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমদের নামে ওই বাড়ির নামজারির নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের আপিল গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। গত ৩০ আগস্ট এ মামলার ৮০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরে রিভিউ করেন মওদুদ।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ওই বাড়ি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন করার জন্য হাইকোর্ট রায় দেন। রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ দায়ের করে ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ আপিল বিভাগ রাজউককে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর চলতি বছর এ মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাড়িটি নিয়ে দুদকের উপপরিচালক হারুনুর রশীদ রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদ আহমদ ও তাঁর ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৪ সালের ১৪ জুন এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেন বিচারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে তাঁদের আবেদন গত বছরের ২৩ জুন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করেন মওদুদ আহমদ। এ আবেদনের শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার দুটি বিষয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ।
দুদকের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান।
১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির (রাজউক) কাছ থেকে এক বিঘা ১৩ কাঠার এ বাড়ির মালিকানা পান এহসান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী অস্ট্রীয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।