• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপি নাটক করছে-খালেদা জিয়া এতো অসুস্থ হলে ছেলে কেন দেখতে আসে না:শেখ হাসিনা


প্রকাশিত: ৩:২১ এএম, ১৫ অক্টোবর ২৩ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৩ বার

 

বিশেষ প্রতিনিধি : খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার নামে বিএনপি অনশনের নাটক করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আজকে দেখি, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপি নেতারা অনশন করে। আমি জিজ্ঞেস করি, তারা কয়টা থেকে অনশন শুরু করেছিল? বাসায় কী দিয়ে নাস্তা করে এসেছে? বাড়িতে কী দিয়ে ভাত খাবে? কয় ঘণ্টার অনশন? নাটক করারও একটা সীমা থাকে।

(তারা) এই নাটকই করে যাচ্ছে। আসলে বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যেভাবে হোক এ দেশে নির্বাচন হবেই। জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে।’ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী কাকে করবে এ নিয়ে দ্বিধা–দ্বন্দ্বের কারণেই বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।শনিবার রাজধানীর কাওলায় ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এতো অসুস্থ, তাহলে ছেলে কেন দেখতে আসে না, কেমন ছেলে সে। তারা খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে চায়, কিন্তু তাকে নেবে কে? ছেলে তাকে নেবে! সে আশা দূরাশা।তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কখনোই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তাই, যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়েছিলো। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বিএনপির কোনো অবদানই নেই, আর তারা করতেও চায় না।

প্রধানমন্ত্রী জানান, কানাডার পুলিশ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত। কিন্তু যখনই মামলা চলে, তখনই খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। খালেদা জিয়ার ভাই-বোন প্রায়ই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। গণভবনে এসে আমার কাছে কান্নাকাটি করে।বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা নাকি আমাদের উৎখাত করে দেবে। সময় দিয়েছিল ১০ ডিসেম্বর। বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে? যে সরকার জনগণের রায় নিয়ে বারবার নির্বাচিত হয়েছে। দেশের মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না।’

দেশের মানুষ ভোট চোরকে কখনও ক্ষমতায় রাখে না। ভোট চুরির কারণে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচূত করেছিলো মানুষ, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।বিএনপির জন্ম হত্যার মধ্য দিয়ে হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আইন করে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছি, যাতে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়। আর নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বিএনপি, ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, জিয়া, এরশাদের ক্ষমতাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপি আর যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াত মিলে দেশে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি সহ্য করতে পারে না। তারা ক্ষমতায় থাকতে মানুষের অর্থ-সম্পদ লুট করেছে।বিএনপি সরকারে থাকার সময় মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে অতিষ্ট ছিলো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না, শুধু ক্ষতি করতে পারে। খুনিদের দল, মানুষ খুন করা যাদের অভ্যাস তারা জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। বিএনপি দেশের আদর্শে বিশ্বাস করে না।

আওয়ামী লীগকে জনগণের সেবক হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বমন্দায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্যই রিজার্ভের অর্থ খরচ করা হচ্ছে। করোনার সময় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ টাকার বিনিময়ে টিকা দিয়েছে। কিন্তু আমরা বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। টিকা শেষ হয়ে গেলে বিশেষ বিমান পাঠিয়ে টিকা আনার ব্যবস্থা করেছি। টিকা সংরক্ষণে ডিপ ফ্রিজ প্রয়োজন ছিল। সেগুলোও কেনা হয়েছে। এসব কাজে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। করোনাকালে পানির মতো টাকা খরচ করেছি।

২০০১ সালে দেশের সম্পদ বিক্রির মুসলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব আমার কাছেও এসেছিল। বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে দেশের স্বার্থ কখনও বেচি না। ক্ষমতার লোভ আমার নেই। খালেদা জিয়া এসে গ্যাসতো দিতেই পারেনি, উল্টো বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে। আর বিদেশ থেকে টাকা এসেছিল এতিমখানার জন্য, এতিম একটা টাকাও পায়নি, সব টাকা মেরে দিয়েছে নিজে।দেশের উন্নয়ন ধরে রাখতে নৌকাকে বেছে নেবার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় আসলে দেশকে ধ্বংস করে দেবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। তাদের নেতা কে? তারা জানে নির্বাচন হলে নৌকা ভোট পাবে। সেজন্যই বিএনপি নির্বাচনকে নষ্ট করতে চায়। নির্বাচন হবেই। নির্বাচনে মানুষ ভোট দিলে আছি, না হলে নাই।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, মোহাম্মদ এ আরাফাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মান্নান কচি প্রমুখ।