বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি- গুলি করল কে উত্তর মিলছে না?
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : স্বজনরা বলছেন, পুলিশ পায়ে ঠেকিয়ে গুলি করেছে, কিন্তু পুলিশ বলছে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে? এ ঘটনায় এলাকাবাসির প্রশ্ন তাহলে গুলি করল কে? ওসির কাছেও এর সুস্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আবদুল জলিল সাধু (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে পুলিশ পায়ে গুলি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত জলিল পুলিশের তত্ত্বাবধানে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ তাঁর ছেলে ও এক আত্মীয়কেও গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ বলছে, আবদুল জলিল মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের সময় আবদুল জলিল ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। পরে জলিলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এর আগেও মাদক ব্যবসার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবদুল জলিলকে একাধিকবার আটক করেছে। সম্প্রতি মাদক ব্যবসায় দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া এক মাস কারাভোগের পর তিনি মুক্তি পান।
জলিলের মামাতো ভাই শাকিল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি জলিলের বাড়িতেই থাকেন। তিনি ও জলিলের আত্মীয় গোলাম মোস্তফা এক কক্ষে ছিলেন। জলিল অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। শাকিল দাবি করেন, রাত দুইটার দিকে একদল পুলিশ বাড়িতে এসে দরজা খুলতে বলে।
জলিল ঘুম থেকে জেগে দরজা খুলে দিলে পুলিশ ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এক পুলিশের হাতে ছিল ফেনসিডিল। শব্দ শুনে তখন ওই কক্ষে ছুটে যান গোলাম মোস্তফা ও জলিলের ছেলে মিঠুন। পুলিশ গোলাম মোস্তফাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে আর মিঠুনকে ধমক দেয়।
এরপর পুলিশ জলিলকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে দুটি গুলি করে। এরপর জলিলসহ ছেলে মিঠুন ও আত্মীয় গোলাম মোস্তফাকে পুলিশ গাড়িতে করে নিয়ে যায়।
জলিলের পুত্রবধূ রেশমা পারভিন বলেন, তাঁর শ্বশুর জলিল এক মাস কারাভোগের পর বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে ফেরেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রায় সময় থানার পুলিশ বাড়িতে এসে তাঁদের কাছে টাকাপয়সা চায়।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফুল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, জলিলের বাঁ পায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত।পুলিশের দাবি, মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে গেলে জলিলসহ তাঁর লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে।
পরে জলিলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। হামলায় তিন পুলিশ আহত হয়েছে। তাদের বদলগাছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। আটক তিনজনকে ওই দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।