বাড়ছেই চাল তেলের দাম- অদূর ভবিষ্যতে দাম কমবে:উপদেষ্টা
গত ৩ মাসের বেশী সময় ধরে চালের দাম বস্তায় প্রায় হাজার টাকা বাড়তি। ভোক্তা পর্যায়ে নাজেহাল অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। ফের বাড়ল সয়াবিনের দাম। অথচ মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, অদূর ভবিষ্যতে দাম কমানো সম্ভব হবে।
লাবণ্য চৌধুরী : সেই যে দাম বাড়া শুরু হলো চাল ও সয়াবিন তেলের তা আর যেন নামছে না। গত ৩ মাসের বেশী সময় ধরে চালের দাম বস্তায় প্রায় হাজার টাকা বাড়তি। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে নাজেহাল অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। ফের বাড়ল সয়াবিনের দাম। অথচ মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে আজ যে মূল্য বৃদ্ধি করতে বাধ্য হলাম, আমি মনে করছি, এই বাধ্যবাধকতা সাময়িক। অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমানো সম্ভব হবে। সিদ্ধান্ত অনুসারে, লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকায় বিক্রি হবে।
বেশ কয়েক দিন আগেই সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী। অথচ সরকার গত ১৭ অক্টোবর ভ্যাটের হার কমিয়ে ১০% করে দেন। পরে নভেম্বরে আরও ৫% ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। ভ্যাট ছাড়ের এই মেয়াদ ছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু দাম কিন্তু কমাননি ব্যবসায়ীরা। আর এবার তো ১৮ টাকা বাড়তি চেয়েছিলেন। কিন্তু পেলেন ১৪ টাকা বাড়তি।
সরকারের ভর্তুকি কমিয়ে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সাপেক্ষে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তবে এই মূল্যবৃদ্ধি সাময়িক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেলের আমদানি ও সরবরাহসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা-সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এত দিন সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ছাড় দিয়েছে। রমজান পর্যন্ত গত কয়েক মাসে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিচালনার ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে এভাবে রাজস্ব ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে।”
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারদর, ট্যারিফ কমিশনের ফর্মুলা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের হিসাবে (ফর্মুলা) তেলের দাম হওয়ার কথা প্রায় ১৯৭ টাকা। যদিও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খোলা সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৯ টাকা।”
মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে আজ যে মূল্য বৃদ্ধি করতে বাধ্য হলাম, আমি মনে করছি, এই বাধ্যবাধকতা সাময়িক। অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমানো সম্ভব হবে। সিদ্ধান্ত অনুসারে, লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকায় বিক্রি হবে।
অন্যদিকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ১৬৯ টাকা, খোলা পাম তেলের দাম ১৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ১৬৯ টাকা হয়েছে। এছাড়াও বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, আগে যা ছিল ৮৫২ টাকা। ভোজ্যতেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ১৫% ভ্যাট আছে। দাম সহনীয় রাখতে এই সরকার গত ১৭ অক্টোবর ভ্যাটের হার কমিয়ে ১০% করে দেন। পরে নভেম্বরে আরও ৫% ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। ভ্যাট ছাড়ের এই মেয়াদ ছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত।