‘বাঙ্গালী খান ফাঁসি ঠেকাতে ব্যয় করেন ২৫ মিলিয়ন ডলার’
এস রহমান : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বন্ধে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী সদস্য আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলী বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়েছেন।তিনি দেশে-বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছিলেন। বিচার বন্ধে লবিস্ট নিয়োগেই তার ব্যয় হয়েছে ২৫ মিলিয়ন ডলার।
লবিস্ট ফার্মের রশিদ বিচেনায় নিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত এসব কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।সোমবার দুপুরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর আপিলের ২৪০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
এরপর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মাহবুবে আলম বলেন, ‘মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে দেয়া রায়টি প্রকাশ হয়েছে। আদালত মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রসিকিউটরদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে শুনানির সময় একটি কাগজ দাখিল করেছিলাম। আদালত বলেছেন- বিচার বন্ধে ২৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন, কী করেননি সেটা প্রমাণসাপেক্ষ।’মাহবুবে আলম বলেন, ‘তবে লবিস্টদের দেয়া রশিদ বিবেচনায় নিয়ে আদালত বলেছেন- মীর কাসেম আলী খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং বিচারকে নষ্ট করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতারের পর ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আলবদর কমান্ডারের বিচার প্রক্রিয়া।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ আনেন প্রসিকিউশন। পরে বিচার শেষে ১০টি অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল রায় দেন ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর।
এর মধ্যে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যান্য অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম আলী। আপিলে তার খালাস চাওয়া হয়।
গত ৮ মার্চ আপিল আংশিক মঞ্জুর করে তার ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। আপিলের রায়ে ১১ নম্বর অভিযোগে তার ফাঁসি বহাল রাখা হয়। এ অভিযোগটি ছিল কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ, ডালিম হোটেলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা এবং মৃতদেহ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেয়ার অপরাধ সংক্রান্ত।