• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ ভুটান তিন সমঝোতা স্বাক্ষরিত


প্রকাশিত: ৫:০৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৫ বার

”সমঝোতা স্মারকের আওতায় ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট করে দেবে বাংলাদেশ। কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে।”

 

কূটনৈতিক রিপোর্টার : ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং নবায়ন করা হয়েছে পুরানো একটি চুক্তি৷
এসব সমঝোতা স্মারকের আওতায় ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট করে দেবে বাংলাদেশ। কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে। এছাড়া ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করা হবে দুই দেশের মধ্যে।

আর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আগে যে চুক্তি রয়েছে, সেটি আবার নবায়ন করেছে দুই দেশ। সোমবার দুপুরে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর এসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷

বাংলাদেশের স্বাধধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সোমবার সকালে ঢাকা পৌঁছান ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং রানি জেৎসুন পেমা। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
ভুটানের রাজা বেলা সোয়া ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে টাইগার গেটে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক বসেন প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা। একান্ত বৈঠক শেষে তারা দুই দেশের প্রতিনিধি দল নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দুই দেশের সমঝোতার আওতায় থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বৃহত্তর কল্যাণ সাধন হবে।বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।

কুড়িগ্রামে একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটানকে ১৯০ একর জমি দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করবে।আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এমবিবিএস কোর্সে ভুটানের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হবে।

প্রতিবছর ভুটানের ফরেন সার্ভিস অফিসারদের জন্য বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য দুটি আসন বরাদ্দ করা হবে। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় কারিগরী সহযোগিতা দেবে।

বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিলে ভুটানের কৃষি বিষয়ক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মেয়াদে ৩ বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।একইসঙ্গে ভুটানের সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ল্যাপটপ ও ট্যাবসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস উপহার হিসেবে দেবে বাংলাদেশ।

ভুটানের রাজা বেলা সোয়া ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে টাইগার গেটে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সফরের দ্বিতীয় মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন ভুটানের রাজা।

পরে তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন। বিকালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। বুধবার পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাবেন ভুটানের রাজা। এরপর বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শনে যাবেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে।

কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করতে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করবেন ভুটানের রাজা। কুড়িগ্রামের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকালে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। সেখানে গার্ড অব অনার দেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।