• সোমবার , ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ পাকিস্তানে চাকরি বৈষম্য


প্রকাশিত: ১০:৪৩ পিএম, ৩ অক্টোবর ২৪ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

 

বয়স ৩৫ যৌক্তিক দাবি: আকপও চেয়ারম্যান মুফতি আল্লামা খলিলুর রহমান জিহাদী-

 

 

বিশেষ প্রতিনিধি : সারা বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ একটি যৌক্তিক দাবি।এ দাবির যৌক্তিকতার সঙ্গে ইতিমধ্যে একমত পোষন করেছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। প্রশাসনের একজন দক্ষ মানুষ তিনি। তিনি সত্যিকার অর্থে ভালো দিক নির্দেশনা দিয়ে যাবেন জাতির জন্যে এটা আমরা আশা করছি। এজন্য তাঁকে আল কুরআন প্রচার সংস্থা (আকপও) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি আল্লামা খলিলুর রহমান জিহাদী আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বর্তমান বয়সসীমা বিশ্বের ১৬২টি দেশের সর্বনিম্ন বয়সের চেয়েও পাঁচ বছর কম।

যাহোক, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছেন চাকুরি প্রত্যাশীরা। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে সোমবার তারা রাজপথে নেমেছিলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ছোঁড়া হয়েছে টিয়ারশেল।এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে সরকারকে চাকরির বয়সসীমা নিয়ে পরামর্শ দেবে।

ইতিমধ্যে বয়স ৩৫ নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, এটি একটি যৌক্তিক দাবি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ন্যূনতম ৩৫ বছর করার দাবি যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণে গঠিত কমিটিরও আহ্বায়ক। বুধবার চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ বছর প্রত্যাশীদের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বয়স বৃদ্ধি করার যৌক্তিকতা আছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’ কী যৌক্তিকতা আছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কভিড, সেশনজটে অনেকের সমস্যা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনার পর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার যে সিদ্ধান্ত হবে, তা দীর্ঘ সময়ের জন্য হবে। পাঁচ বছর পরে আবার বয়সসীমা পরিবর্তন করা হবে, সেটি ঠিক নয়।

আন্দোলনকারীদের দাবি, উন্নত বিশ্বসহ বেশিরভাগ দেশেই চাকরির বয়সসীমা বেশি। তাদের এই দাবি কতটা সত্য? এক কথায় উত্তর হলো, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাংলাদেশের চেয়ে ১৬২ দেশে বেশি। আর প্রতিবেশী আট দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫-৪৫। শুধু বাংলাদেশ-পাকিস্তানে ৩০। দেশে দেশে চাকরির বয়সসীমার তথ্য পর্যবেক্ষেণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বর্তমান বয়সসীমা বিশ্বের ১৬২টি দেশের সর্বনিম্ন বয়সের চেয়েও পাঁচ বছর কম। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশে চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৪০ থেকে ৫৯ বছর।

হাতে গোনা বিশ্বের কয়েকটি দেশে চাকরির সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর হলেও, বাংলাদেশে তার চেয়েও কমিয়ে ৩০ বছরে রাখা হয়েছে। দেশের গড় আয়ু, মাথাপিছু আয়সহ সার্বিক সূচক বাড়লেও বাড়ানো হয়নি এ সীমা। যা দেশের লাখো বেকারের বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এ কারণে চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ করার জোর দাবি তুলেছে হাজারো চাকরি প্রত্যাশী। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সাধারণ ছাত্র পরিষদের দেয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৫৯ বছর। ভারতে (পশ্চিমবঙ্গ) বয়সসীমা ৪০ বছর।বিভিন্ন দেশের মানদণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর। কোনও কোনও দেশে এটি উন্মুক্ত। প্রতিবেশী অন্তত ৮ দেশে এ বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছর। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে এ বয়সসীমা ২৭ থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়, যা এখনো কার্যকর রয়েছে।

ভারতে রাজ্যভেদে ও চাকরির ধরন অনুযায়ী আবেদনের বয়সসীমা ৩২-৪২ বছর পর্যন্ত। প্রশাসনিক সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে হলে ন্যূনতম ২১-৩২ বছর বয়স হতে হয়। তবে কোটায় ৪২ বছর বয়স পর্যন্ত করা যায়। অনগ্রসর শ্রেণির জনগণ ৩৫-৩৭ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারে।নেপালে গেজেটেড ও নন গেজেটেড পদে আবেদন করার ক্ষেত্রে পুরুষের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর। তবে নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। গেজেটেড পদ শাখা কর্মকর্তা, উপসচিব এবং যুগ্ম সচিব বা এ ধরনের পদে ন্যূনতম ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। এ পদে মহিলা ও প্রতিবন্ধীরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন।

নেপালে শূন্য পদের উপ ও যুগ্ম সচিব পদে ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করার বিধান রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার প্রাথমিক স্তরের পদে সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। অফিসার পদে সর্বনিম্ন ২১ ও সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারেন।শ্রীলঙ্কায় স্নাতক পাস করা বেকাররা সরকারের যে কোনো কর্মসূচির অধীনে ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। আগে এ সীমা ছিল ৩৫ ।