• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে নয়া কোকেন সম্রাট-কয়েক’শ কোটি টাকার কোকেন জব্দ


প্রকাশিত: ৫:০৩ এএম, ২৮ জুন ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮১ বার

koken-www.jatirkhantha.com.,bdপ্রদীপ কুমার শীল:  চট্টগ্রাম বন্দরে জব্দ হওয়া সূর্যমুখী তেলের সেই চালানের একটি নমুনায় তরল কোকেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পৃথক পরীক্ষায় এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বন্দরে জব্দ হওয়া চালানের ৯৬ নম্বর ড্রামে এই কোকেন শনাক্ত হয়। যে ড্রাম থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেখানে ১৮৫ কেজি সূর্যমুখী তেল রয়েছে। এই তেলের এক-তৃতীয়াংশে কোকেন থাকতে পারে বলে মনে করছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
dtpg smackhead 14   QUETTA PAKISTAN DRUGSঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার জানা মতে, এটা বাংলাদেশে ধরা পড়া কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান।’
কোকেন সন্দেহে ৬ জুন রাতে কনটেইনারটি বন্দরে সিলগালা করা হয়। ৮ জুন এটি খুলে ১০৭টি ড্রামের প্রতিটিতে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল পাওয়া যায়। এই তেলের নমুনা প্রাথমিক পরীক্ষা করে কোকেন শনাক্ত না হওয়ায় পরীক্ষাপদ্ধতি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং পুলিশ কর্মকর্তারা। এ কারণে তখন অধিকতর পরীক্ষার জন্য সব কটি নমুনা দুটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হোসেইন আহমেদ  শনিবার বলেন, দুটি পরীক্ষাগারে একটি নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। কোকেন শনাক্ত হওয়ার পর চালানটি এখন কড়া নজরদারির মধ্যে রাখার জন্য বলা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।
বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সূর্যমুখী তেলের একটি নমুনায় তরল কোকেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে সব কটি নমুনা এখনো পরীক্ষা হয়নি। পর্যায়ক্রমে সব কটি চালানের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত কোকেন পাউডার হিসেবে পাচার হয়। তরল কোকেন পাচার হওয়ার বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। কালোবাজারে প্রতি কেজি পাউডার কোকেন ৩৫ কোটি টাকায় লেনদেন হয়।
বলিভিয়া থেকে সূর্যমুখী তেলের এই চালানটি উরুগুয়ের মন্টিভিডিও বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয় গত ১২ মে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে চালানটি আসে। তবে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ এই পণ্য আমদানির সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন। এ ঘটনায় খান জাহান আলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে প্রাথমিক পরীক্ষায় কোকেনের উপস্থিতি শনাক্ত না হওয়ায় তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখায় বন্দর থানা পুলিশ।
মাঠপর্যায়ের পরীক্ষা নিয়ে সন্দেহ ছিল: ৮ জুন বন্দর চত্বরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রাসায়নিক বিকারক দিয়ে ১০৭টি নমুনা পরীক্ষা করেন। এতে কোকেনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে তখন জানানো হয়। নৌবাহিনীর রাসায়নিক শনাক্তকরণ যন্ত্রে পরীক্ষায়ও এসব নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়নি। কিন্তু এই পরীক্ষাপদ্ধতি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রসায়নবিদ দুলাল কৃষ্ণ সাহার কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রাথমিক পরীক্ষায় কেন কোকেন ধরা পড়ল না? পরে কীভাবে ধরা পড়ল? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের একটি পরীক্ষার যন্ত্র বা কিট দিয়ে কোকেনের অস্তিত্ব পরীক্ষা করি। তখন ধরা পড়েনি। যে কারণে তা পরে অন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।’