বাংলাদেশের সর্বস্তরে ভালো লোককে তাড়িয়ে দিচ্ছে খারাপ লোক-আকবর আলি খান
স্টাফ রিপোর্টার: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেছেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরে এমনকি শিক্ষাব্যবস্থায়ও এখন “গ্রেশাম’স ল” চলছে। গ্রিসে উৎপত্তি হওয়া “গ্রেশাম’স ল” অর্থনীতির একটি সূত্র। যেখানে বলা হয়েছে, ভালো লোকদের তাড়িয়ে দেয় খারাপ লোকেরা। বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে এখন ভালো জিনিসকে তাড়িয়ে দিচ্ছে খারাপ জিনিস। ভালো লোককে তাড়িয়ে দিচ্ছে খারাপ লোক।
আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আকবর আলি খান এসব কথা বলেন। আকবর আলী খান এ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র।
আজ সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ওই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৫তম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আকবর আলি খান। দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠান, সম্মাননা ও বৃত্তি প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আকবর আলি খান প্রথমে বিভাগ নিয়ে নানা স্মৃতিচারণা করেন। পরে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বিষয়ে অনার্স পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু উন্নত বিশ্বে যেমন হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটি হয় না।
সেখানে অনার্সে সাধারণত কিছু মৌলিক বিষয় শেখানো হয়। এরপর উচ্চতর বিষয়ে পড়াশুনা করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা শিক্ষার ক্ষেত্রে নিচের দিক থেকে বিশেষায়ন শুরু করেছি, ওপরের দিকে আর বিশেষায়ণের কোনো উপায় থাকে না। এই অবস্থা বিরাজ করতে থাকলে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা ক্রমশ অন্ধকারের দিকে যাব।’এ অবস্থার উত্তরণে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম অনুসারে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান আকবর আলি খান।
অনুষ্ঠানে ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫’ ও ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার-২০১৪’ লাভের জন্য যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া নিশাত আমিন এবং একই বিভাগের অধ্যাপক আবু মো. দেলওয়ার হোসেনকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভাগের গরিব ও মেধাবী ১৭৬ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।
আলোচনা সভায় সোনিয়া নিশাত বলেন, যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভাগের জন্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী তথা মিলনমেলা একটি অনন্যসাধারণ বিষয়। এর মাধ্যমে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটি আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আবদুল মোমেন চৌধুরী, মোফাক্কারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ বিভাগের পাঁচ শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।