বাংলাদেশের গনহত্যায় নিক্সনের সায় ছিল-ইন্দিরা দুশ্চরিত্রা বলে গালিও দিয়েছিলেন
টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে লাবণ্য চৌধুরী.ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর হাতে যে গণহত্যা ঘটে তা অস্বীকার করেছিলেন। চার দশকেরও বেশি সময়ের পর এতথ্য জানিয়েছেন, পুলিৎজার বিজয়ী মার্কিন সাংবাদিক টিম উইনার। এমন তথ্য ‘চিদানন্দ রাজঘাতা’ নামে ভারতের একটি পত্রিকার বরাত দিয়ে প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণহত্যার বিষয়টি জেনেও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ বরং সায় দিয়েছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।নিক্সন সম্পর্কে গভীর অনুসন্ধান শেষে টিম উইনার এ তথ্য দিয়েছেন। বাংলাদেশীদের সহায়তা করার জন্য তিনি ভারতের প্রতি মনক্ষুন্ন হয়েছিলেন। রিচার্ড নিক্সন অযৌক্তিকভাবেই ভারত ও ভারতীয়দের অপছন্দ করতেন।
টিম উইনার দাবি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন উপমহাদেশকে নিয়ে অনেক খেলায় মেতেছিলেন। এ সম্পর্কে ভারতের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করেছেন। বিল ক্লিনটনের ২৫ বছর আগে রিচার্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন।
টিম জানান, নিক্সন ভারত বিদ্বেষী ছিলেন এটা সকলের জানা কথা। তিনি কেন ভারত বিদ্বেষী ছিলেন, কেন তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নিজ ব্যাপার নিয়ে মন্তব্য করেছেন সেই রহস্যের বা কি কারণ ছিল ? নিক্সন বহু বছর আগে ইন্দিরা গান্ধীকে দুশ্চরিত্রা বলে গালি দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সাথে সুসম্পর্ক নষ্ট করার জন্যই তিনি এ ধরনের বিশ্রি ভাষায় গালি দিয়েছিলেন ইন্দিরাকে।
পাক- মার্কিন সম্পর্কের ছেদে প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পাশে যারা ছিলেন তারাই জানতেন ইন্দিরা গান্ধীকে গালি দেওয়ার এ খবর। এছাড়া এ গালির খবর আরো জানতেন পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খান, ইরানের রেজা শাহ পাহলভি ও জর্দানের বাদশাহও।
১৯৬২ সালে নি·ন ও কিসিঞ্জার চীন সীমান্ত দিয়ে একটি পথ করতে চেয়েছিলেন। চীন দিয়ে পথ করার জন্য ইয়াহিয়ার পূর্ণ সমর্থন ছিল। কিন্তু বাধা হয়ে ছিল ইন্দিরা গান্ধী। এ পথের মূল উদ্দেশ্য ছিল তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বার উন্মোচন করা। আর তার সূত্রপাত হতে পারত পাক-ভারত।
প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ডেমোক্রেসির চেয়ে সামরিক শাসন চালাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। কারণ তিনি মনে করতেন সামরিক সরকার দেশে স্থিতিশীলতা আনতে পারে যা ডেমোক্রেসি পারে না।
নিক্সন তার একটি বইয়ে লিখেছেন ‘ আমরা ৯০টি দেশে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি যার মধ্যে মাত্র ৩টি গণতান্ত্রিক দেশ আর বাকিগুলো হচ্ছে ৈস্বরশাসকের দেশ। এক সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন বলেছিলেন, সামরিক শাসনের দেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশি সমর্থন করে। তবে পাকিস্তানের বিষয়টি ব্যতিক্রম।
টিম আরো বলেন, নিক্সন শুধু ভারত বিদ্বেষী ছিলেন না একই সাথে কৃষ্ণাঙ্গ ও ইহুদিদেরও ঘৃণা করতেন। হোক আমেরিকান বা নন আমেরিকান। চমকপ্রদ ও অভিভূতকারী এই দুই বিশ্বাসের ভিত্তিতে তিনি ১৯৭২ সালের নির্বাচনে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। রিচার্ড নিক্সন একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি পদত্যাগ করেছিলেন। লাওস ও কম্বোডিয়ায় যুদ্ধের ইদ্ধন দিয়েছিলেন মার্কিন এ জটিল প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন।