• রোববার , ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশী পাঁচশ শিশু পর্নোগ্রাফী-৮ দেশের ১৩ ক্রেতা ডিলার শনাক্ত


প্রকাশিত: ২:২৫ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ১৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৫০ বার

 

 

tipu-1 শফিক আজিজি.ঢাকা:
বাংলাদেশ থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি কিনছে এমন বিদেশি ক্রেতাদের খুঁজছে আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোল। আর এ কাজে সহায়তা করছে বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।গত ১২ জুন ছিন্নমূল শিশুদের দিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তা বিক্রির অভিযোগে তিন সহযোগীসহ গ্রেফতার হন টিপু কিবরিয়া নামে এক শিশু সাহিত্যিক। এরপর থেকেই ইন্টারপোলের এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শাহ আলম বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, বেলজিয়াম ও ফিলিপাইন এই ৮টি দেশের ১৩ জন ক্রেতা ও ডিলারকে শনাক্ত করেছি। যারা বাংলাদেশ থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি ক্রয় করে।’

 গ্রেফতারকৃত টিপু কিবরিয়া বাহিনী এবং বিদেশি ক্রেতাদের সম্পর্কে শাহ আলম বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে তারা পর্নোগ্রাফির আন্তর্জাতিক আইনই লঙ্ঘন করেছেন। আর সবচেয়ে বিরক্তির ব্যাপার হচ্ছে যে, তারা এ ধরনের আরো নতুন নতুন ছবি ও ভিডিও ক্লিপ চাচ্ছে।’পর্নোগ্রাফির জন্য টিপুকে প্রত্যেক সপ্তাহে একজন/দুজন নতুন শিশু সরবরাহ করতে হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে টিপু এই ব্যবসা শুরু করেন। এরপর থেকে তিনি প্রায় ৫০০ শিশুকে এই কাজে ব্যবহার করেছেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টিপু এই কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে কিভাবে তার সহযোগী নূরুল আমিন ও নূরুল ইসলাম শিশুদেরকে পটাতো সে বর্ণনাও দিয়েছেন।তিনি বলেন, টিপুর সহযোগীরা ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের টার্গেট করতো। তারা ওই শিশুদেরকে চাকরির প্রলোভন দিতো। এরপর তাদেরকে দিয়ে শট ফিল্ম করতো। ছবি তুলতো। যেগুলোতে টিপু নিজেও অভিনয় করতো।

t-2সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, এসব ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিদেশি ক্রেতাদের পাঠিয়ে দিতো। এর বিনিময়ে তিনি টাকা পেতেন। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও তার আরেক সহযোগী শাহরুল ইসলামের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে তিনি এই টাকা উঠাতেন।তিনি বলেন, টিপু এই কাজের জন্য প্রত্যেক শিশুকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে দিতো। আর এসব শিশু যেহেতু খুবই গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা তাই তারা এ ব্যাপারে কখনো কারো কাছে কোনো অভিযোগ করেনি।তিনি আরো বলেন, টিপুকে এক শিশুসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ওই শিশু প্রথমে তাকে পর্নোগ্রাফিতে ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে। যদিও তার মেডিকেল প্রতিবেদন বলছিলো তাকে সে কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ওই শিশুই আবার পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছে।

t---3সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইশরাত শামিম বলেন, ‘এই শিশুরা কেবল টাকার জন্যই এ কাজটি করেছে। কারণ, তাদের গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা। তাই টাকাটা তাদের কাছে অনেক বড় একটা ব্যাপার।’

ছিন্নমূল এসব শিশুদের এছাড়াও আরো অনেক অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এসবের জন্য এক শ্রেণির মানুষ তাদেরকে আশ্রয় দেন। এভাবে তাদেরকে নষ্ট করা হয়। একদিন তারাই হয়ে উঠে বড় সন্ত্রাসী।