বন পুড়ে ছাড়খাড় তবুও-ঢাকায় নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে বনমন্ত্রী ও সিএফও
সাইফুল বারী মাসুম : পরিকল্পিতভাবে বন পুড়ে ছাড়খাড় করা অব্যাহত থাকলেও ঢাকায় নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে বনমন্ত্রী ও সিএফও। ঘটনার ৪ দিন পরও তাঁরা বন পরিদর্শনে যাননি। তবে শোনা যাচ্ছে আজ শনিবার সিএফও এবং কাল রবিবার বনমন্ত্রী পরিদর্শনে যেতে পারেন সুন্দরবন।
সরেজমিনে জানা গেছে, চতুর্থ দিনেও সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তুলাতলা এলাকার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শনিবার আগুন নেভাতে বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী। সুন্দরবনের গহীনে ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলায় গত বুধবার বিকালে লাগা আগুনে এখন পর্যন্ত পুড়ে গেছে সাড়ে তিন একর বনভুমি।শনিবার সকালে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও (বিভাগীয় বন কর্মকর্তা) মো. সাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগুনে বনের সুন্দরীসহ অণ্য মূল্যবান উদ্ভিদ পুড়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে লাগা আগুনে মাটির উপরে থাকা বলাগাছ ও লতা জাতীয় উদ্ভিদ পুড়েছে ।এসয়ম আগুন তাদের নিয়ন্তণে রয়েছে দাবি করে এ বন কর্মকর্তা আরও বলেন, যেসব স্থানে সামান্য কিছু ধোঁয়া রয়েছে তা পুরোপুরি নেভাতে অতিরিক্ত সর্তকতা হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীকে আরও দুদিন বনে রাখা হবে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম গহীন বনে আগুন লাগার ঘটনাকে পরিকল্পিত নাশকতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কারা- এঘটনা কি উদ্যেশে করছেন, তা নির্ণয় করে বনবিভাগের পক্ষ থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
এদিকে আজ প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. ইউনুসের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা রয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে সুন্দরবনের উদ্যেশে বাগেরহাট রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় মাওয়া ঘাটে রয়েছেন বলে দাবি করা হয়।ওদিকে আগামীকাল রোববার বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর আশার কথাও জানান এ কর্মকর্তা।
আগুন লাগার ঘটনায় সুন্দরবনের অভ্যন্তরে জেলে বাওয়ালীদের প্রবেশ ঠেকাতে গোটা সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জের অন্তত দুটিতে (চাদপাই ও শরনখোলা) পাশ পারমিট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছে বনকর্তপক্ষ।
এদিকে বনের তুলাতলা এলাকায় পরিকল্পিত আগুন লাগানো হয়েছে বনবিভাগের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শরনখোলা থানায় এমন অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এঘটনার পর সন্দেহভাজন হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যায় শরনখোলা উত্তর রাজাপুর থেকে পুলিশ খলিলুর রহমান হাওলাদার (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। এর আগে চলতি মাসের ১৩ ও ১৮ এপ্রিল সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী এলাকায় পৃথক দুটি আগুনের ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে শরণখোলা থানা এবং বন আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। যদিও ওই মামলার এজাহারভুক্ত ১১ আসামির কাউকে এখনও পর্যন্ত পুলিশ আটক করতে পারেনি।
চলতি এপ্রিল মাসের ১৩,১৮ ও ২৭ তারিখে চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায়ও তিন দফা আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুনের তিনটি ঘটনাকে বনবিভাগ পরিকল্পিত অগ্নিকা- উল্লেখ করে বনবিভাগ শরনখোলা থানায় অভিযোগ করে। তবে এর কিছু দিন আগেও গত ২৮ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় আগুন লাগে।