• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

বনানী ধর্ষণে সাফাতের ভিডিও মিলেছে-ফুটেজ লুকানোয় ধরা খাচ্ছে রেইনট্রি


প্রকাশিত: ১:১৩ পিএম, ২০ মে ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯১ বার

দিনা করিম  :   অবশেষে বনানী ধর্ষণে সাফাতের ভিডিও মিলেছে ওর নিজের মোবাইল r1ssফোনে।অন্যদিকে ভিডিও ফুটেজ লুকানোয় ধরা খাচ্ছে রেইনট্রি  হোটেল মালিক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ও গোয়েন্দারা জাতিরকন্ঠকে জানান, মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের পুত্র সাফাত আহমেদের মোবাইল ফোন থেকে এই ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে।এ ঘটনায় সাফাতের বিরুদ্ধে বনানী থানায় আইসিটি অ্যাক্টে একটি মামলা দায়ের করবেন দুই অভিযোগকারীর একজন।

এছাড়া সাফাতের সঙ্গে অভিযোগকারীর নানা আঙ্গিকে জড়িয়ে ধরার ছবি রয়েছে। ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ভিডিও ফুটেজ ও ছবি উদ্ধারের বিষয়টি আইসিটি অ্যাক্টে মামলা দায়েরের বিষয়ে পুলিশ সকল গণমাধ্যমকে শিগগির জানাবে।

অপরদিকে, সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের মালিকানাধীন দ্য রেইনট্রি হোটেল থেকে উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের কিছু তথ্য উদঘাটন করা গেছে বলে দাবি করেছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

২৮ মার্চ ধর্ষণের ঘটনার পর ঐ হোটেলে সাফাত, সাকিফ ও নাঈম একাধিকবার যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। উদ্ধার করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সাফাতের মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারের খবর জানিয়ে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, গাড়ি চালক বিল্লাল দ্য রেইনট্রি হোটেলের ৭০১ নম্বর কক্ষের বাথরুম থেকে মোবাইল ফোন দিয়ে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে। বাথরুমের দেয়ালের কাঁচের রুমের দিক থেকে কিছুই দেখা যাবে না। কিন্তু বাথরুম থেকে দেয়ালের কাঁচ দিয়ে রুমের ভিতরের সব কিছু দেখা যায়। ভিডিও করার পর সাফাত তার মোবাইল ফোনে ঐ ফুটেজ নিয়ে নেয়।

ঘটনার কয়েকদিন পর সাফাত তার দেহরক্ষী রহমত আলীকে ঐ দুই ছাত্রীর বাসায় পাঠিয়েছিলেন। দুই ছাত্রীর পারিবারিক বিষয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য সাফাতের নির্দেশে এ কাজ করেছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে রহমত আলী জানান। গাড়ি চালক বিল্লাল এই মামলার চার দিনের রিমান্ডে আছেন। গতকাল তার রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষ হয়েছে। এই মামলায় সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলীর ৩ দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হয়েছে।

এদিকে মামলার এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফের ৭ দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন ছিল গতকাল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাঈমের মুখোমুখি করা হয় সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত আলীকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে উপস্থিত ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বিল্লাল আগেই দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। নাঈমের সামনে ফের একই ধরনের বক্তব্য দেন। এ সময় নাঈমের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিল্লাল যা বলছে তা ঠিক কিনা, তখন নাঈম ‘ঠিক’ বলে সম্মত দেয়ে। সেই সঙ্গে নাঈম এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।

নাঈমের সঙ্গে একাধিক নারীর অনৈতিক সম্পর্কের তথ্য দিয়ে ঐ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘নাঈম আসলে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর তরুণীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পেশাদার দালাল।’   গুলশান ও বনানী এলাকার উচ্চবিত্ত শ্রেণীর বখে যাওয়া তরুণ-তরুণীর মধ্যে ইয়াবা সরবরাহ করতেন। ইয়াবা সরবরাহ করেই তিনি এই সোসাইটির খুব কাছে চলে যান। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাঈমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, সাফাতের সঙ্গে তার কিভাবে পরিচয় হয়েছে।
 

২৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ-
অপরদিকে, বনানী থানার ওসির কর্তব্যে অবহেলা ও আসামিদের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি আরো দুই-তিন দিন পর রিপোর্ট জমা দেবে পুলিশ কমিশনারের কাছে। কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন অ্যান্ড ক্রাইম) মিজানুর রহমান। ইতিমধ্যে কমিটি বনানী থানার ওসি ফরমান আলীকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এই কমিটিও অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।

এর মধ্যে একটি কমিটি মামলা নিতে গড়িমশি, প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ পেয়ে বনানী থানার ওসি ফরমান আলীকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বনানী থানার ওসি অভিযোগের মৌখিক ও লিখিত জবাব দিয়েছেন তদন্ত কমিটিকে। তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কারো গাফিলতির প্রমাণ মিললে, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।