• বৃহস্পতিবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বদ ক্রিকেটারদের চিচিং ফাঁক-


প্রকাশিত: ১২:২৪ এএম, ২৮ জুলাই ১৫ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৪ বার

অনলাইন ডেস্ক:  ক্রিকেট ‘ভদ্রলোকের খেলা’। কিন্তু এই সাধু বাক্য কি আর সব সময় সবার মনে থাকে। এই তো সেদিন তামিমকে কাঁধে ধাক্কা দিলেন কুইন্টন ডি কক। ওয়ানডেতে একই কাজ করেছেন রাইলি রুশো। এর কদিন আগে মাত্রই ওয়ানডেতে যাত্রা শুরু করা মুস্তাফিজুর রহমানকে ধাক্কা মেরে অনেককে অবাক করে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
ক্রিকেটে এমন ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে। আগুনে বাক্যালাপ চালাচালির উদাহরণ তো ভূরি ভূরি। উইজডেন ইন্ডিয়া তাদের চোখে এর মধ্য থেকে দশটি ঘটনা বেছে নিয়েছে। যার মধ্যে জায়গা পেয়েছে মুস্তাফিজকে দেওয়া ধোনির সেই ধাক্কা-কাণ্ডও।

ব্যাট নিয়ে তেড়ে এলেন মিয়াঁদাদ।ডেনিস লিলি-জাভেদ মিয়াঁদাদ
ক্রিকেট ইতিহাসের ‘জঘন্যতম’ ঘটনাগুলোর একটি। পার্থ টেস্টে লিলির বলকে লেগ সাইডে ঠেলে রান নেওয়ার জন্য ছুটলেন মিয়াঁদাদ। কিন্তু লিলি অযাচিতভাবে পথে এসে দাঁড়ালে ধাক্কা লেগে যায় মিয়াঁদাদের সঙ্গে। কিছুক্ষণ বচসা শেষে মিয়াঁদাদ নিজের জায়গায় ফিরে যাচ্ছিলেন। তর্কে হেরে যাওয়াটা লিলির বোধ হয় সহ্য হলো না, মিয়াঁদাদকে লাথি মেরে বসলেন! মিয়াঁদাদও ব্যাট তুলে তেড়ে আসেন লিলির দিকে। আম্পায়ার টনি ক্রাফটার পরিস্থিতি সামাল দেন।

রোশন মহানামা-ড্যারেন গফ
ম্যাচে যথেষ্ট বারুদ ছিল। আগের ইনিংসে মুরালিকে ‘নো’ ডেকে সেই বারুদ আরও ঠেসে দেন আম্পায়ার। কেবল অপেক্ষা ছিল কাঠি ঠুকে দেওয়ার। সেটাই হলো ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে। গফের বল কোনোমতে আটকে রান নিতে ছুটলেন মহানামা। গফকে স্ট্রাইকিং প্রান্তে বল ধরতে ছুট লাগাতে দেখে মহানামা দৌড়ের অজুহাতে গফকে কাঁধে ধাক্কা মারলেন। গফ আম্পায়ারের কাছে নালিশ জানাতে গেলে মহানামা উল্টো গফকেই দোষারোপ করলেন। ঘটনা সেখানেই শান্ত হলো না। হতে দিলেন না অ্যালেক স্টুয়ার্ট। ওভার শেষে প্রান্ত বদলের সময় মহানামাকে কাঁধের ধাক্কা দিয়ে ‘পাওনা মেটালেন’ ইংলিশ উইকেটরক্ষক।

জন স্নো-সুনীল গাভাস্কারগাভাস্কার-স্নোর সেই ধাক্কা-কাণ্ড।
বিশাল বপুর জন স্নোর হয়তোবা ‘লিটল মাস্টার’-এর ভালো ব্যাটিং সহ্য হচ্ছিল না। গাভাস্কার রান নেওয়ার সময় ধাক্কা দিয়ে বসলেন। এক ধাক্কাতেই গাভাস্কার ভূপাতিত। শাস্তি হিসেবে পুরো সিরিজে স্নোকে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সতীর্থ খেলোয়াড়ের চোট আবার বরাত খুলে দেয় তাঁর। দলে ফিরে অবশ্য আর ধাক্কা দেওয়ার বোকামি করেননি স্নো।

রশিদ প্যাটেল-রমন লাম্বা
দুলীপ ট্রফির এক ম্যাচে লাম্বার দল নর্থ জোন একটু ‘বেশি’ সময় নিয়েই ব্যাট করছিল। ৯ উইকেটে ৭২৯ রানের পাহাড়। এত রান হজম করা কঠিনই। ‘বদহজমের’ শিকার ওয়েস্ট জোনের রশিদ কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন লাম্বার সঙ্গে। মেজাজ এতটাই চড়ে গিয়েছিল, বোলিং করতে এসে লাম্বার দিকে বিমারও ছুড়ে মারেন। এখানেও রাগ পড়েনি। স্টাম্প তুলে নিয়ে পুরো মাঠ তাড়া করে বেড়ান লাম্বাকে!

-মারলন স্যামুয়েলস

ওয়ার্নের দিকে ব্যাট ছুড়ে মারলেন স্যামুয়েলস ।শেন ওয়ার্নডেভিড হাসির জার্সি ধরে হয়তো কাপড়ের মান দেখতে চেয়েছিলেন স্যামুয়েলস। কিন্তু ওয়ার্নের ব্যাপারটি একেবারেই পছন্দ হলো না। একটু পরেই স্যামুয়েলসের গায়ে বল ছুড়ে মারেন ওয়ার্ন। স্যামুয়েলসও মুখ বুজে সহ্য করার মানুষ নন। ব্যাট ছুড়ে মারলেন ওয়ার্নের দিকে। ম্যাচ রেফারি স্যামুয়েলসকে কড়া কথা শুনিয়ে দেন। ওয়ার্ন শুধু ভর্ৎসনাতেই পার পাননি, বেআক্কেলের মতো ঘটনার সূত্রপাত করেছিলেন বলে গুনতে হয় আক্কেলসেলামি।

গৌতম গম্ভীর-শেন ওয়াটসন
২০০৭ এর শুরুতেই শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে ঝামেলা বেধেছিল গম্ভীরের। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের উত্তেজনার অংশ ভেবে সেবার ম্যাচ রেফারি ছেড়ে দেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই শেন ওয়াটসনের কাঁধে ধাক্কা দিয়ে আর ছাড় পেলেন না। দুবারই যে একই ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। ফলাফল এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।

হরভজন সিংহ-অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস
এই ঘটনা মাঠের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক দূর গড়িয়েছিল । ২০০৮ সালের সিডনি টেস্টে সাইমন্ডসকে ‘বাঁদর’ বলে গালি দিয়েছিলেন হরভজন। বর্ণবাদের অভিযোগে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু ভারতীয় বোর্ড পাল্টা আপিল করে এই বলে যে, তাদের সংস্কৃতিতে ‘বাঁদর’ নেহাতই ইয়ার-দোস্তিদের নিরীহ গালি। এই যুক্তি নাকি ক্রিকেট বিশ্বে দাপট, যে কারণেই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত হরভজন হালকা জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যান।


কাইরন পোলার্ড-মিচেল স্টার্কপোলার্ডের আগ্রাসী ভঙ্গি।

আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচে পোলার্ডের মাথা তাক করে বাউন্সার ছোড়েন স্টার্ক। নিজেকে কোনোমতে বাঁচিয়ে পোলার্ড আবার স্টার্ককে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত করেন। স্টার্ক তেড়ে মেড়ে দৌড়ে এলেন পরের বল করতে। বল ছাড়ার ঠিক আগমুহূর্তে পোলার্ড সরে গেলেন স্ট্যান্স থেকে। ডেড বল! এত কষ্ট করে রান আপে দৌড়ে ‘এনার্জি লস’! স্টার্ক মানবেন কেন? পোলার্ডের দিকে বল ছুড়ে মারলেন। পোলার্ডও স্টার্কের দিকে ছুড়ে মারলেন ব্যাট। দুজনকেই জরিমানা করেছিলেন ম্যাচ রেফারি।

মুস্তাফিজকে ধোনির সেই ধাক্কা।জেমস অ্যান্ডারসন-রবীন্দ্র জাদেজা
ক্রিকেট মাঠে অ্যান্ডারসনের মুখ একটু বেশিই চলে। ২০১৪ সালে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে লাঞ্চের পর খেলতে নেমে জাদেজাকে ধাক্কা মেরে হাতের জোরও দেখাতে চেয়েছিলেন বোধ হয়। ভারতীয় দল নালিশ জানালে ইংল্যান্ড জানায়, জাদেজাই নাকি উল্টো আগ্রাসী আচরণ করেছিলেন। কিন্তু ঘটনার কোনো ভিডিও না পাওয়ায় পার পেয়ে যান দুজনই।

মহেন্দ্র সিং ধোনি-মুস্তাফিজুর রহমান
অভিষেক ওয়ানডেতেই রোহিত শর্মা ও অজিঙ্কা রাহানের উইকেট নিয়ে ভারতের তারকাবহুল লাইন-আপকে চোখ রাঙাচ্ছিলেন মুস্তাফিজ। কিন্তু অনভিজ্ঞতার কারণেই বোধ হয় বল করে বারবার উইকেটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ছিলেন। রোহিত এ নিয়ে একবার আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছিলেন। ৪ উইকেট হারিয়ে ভারতও বেশ কোণঠাসা। এই অবস্থায় আবারও বোলিং করে উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ানো মুস্তাফিজকে পেছন থেকে দৌড়ে আসার সময় ধাক্কা মেরে বসেন ধোনি। ধোনির মতো দশাসই একটা মানুষের ধাক্কা পলকা মুস্তাফিজ সইতে পারবেন কেন? মাঠের বাইরেই চলে যেতে হয় তাঁকে। শুশ্রূষা নিয়ে ফিরে অবশ্য একাই বল হাতে ‘ধাক্কা মেরে’ ছিটকে দেন ভারতকেই।