• মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বঙ্গবীরের ভালবাসা ডাস্টবিনের ‘কুশি’


প্রকাশিত: ৭:৪৮ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ১৫ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৩৬ বার

kadersiddki-kushi-www.jatirkhantha.com.bdসোমালিয়া খন্দকার নীপা. ঢাকা:  ডাস্টবিনের  পাশে কুড়িয়ে পাওয়া সেই কুশি  বেড়ে উঠছে  বঙ্গবীর  কাদের  সিদ্দিকীর  ঘরে। একজন মহান  রাজনীতিবিদ যে  নিরীহ মানুষের  জন্য কিছু করতে পারেন সেটার প্রমাণ কুশি। ২০০৭ সালে কুড়িয়ে পাওয়া সেই কুশি এখন  নামি ইংরেজি স্কুলে পড়ে।দেখতে দেখতে চলে গেছে ৮টি বছর।কেমন আছে  সেই ছোট্ট কুশি?

কাদের  সিদ্দিকী বলেন, সদ্যপ্রসূত কন্যাশিশুকে কুড়িয়ে পাওয়া গেছে রাজধানীর অদূরে বালুর মাঠে। সন্তান প্রসবের পর অজানা কারণে তাকে সেখানে রেখে যাওয়া হয়। এরপর কিছু কাক ঠোকরাতে থাকে শিশুটিকে। কাকগুলি শিশুর কোমল দেহ থেকে মাংস তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে আর তাকে রক্ষায় মরিয়া একটি কুকুর। ঘটনাটি নজরে আসে এলাকাবাসীর। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে রাখা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বঙ্গবীর ছুটে গেলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষকে জানালেন, এই সন্তানটিকে তিনি দত্তক নিতে চান। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাকে বাড়ি এনে তুলে দিলেন স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর হাতে। বললেন, এটা আল্লাহর নেয়ামত। এটা আমার মেয়ে। আমার অন্যান্য সন্তানের মতো তুমি ওকে মানুষের মতো মানুষ করো। নাসরিন সিদ্দিকীও তাকে সাদরে গ্রহণ করলেন।

জানা েগেছ, ২০০৭ সালে কিশোরগঞ্জের এক জনসভায় উপস্থিত হয়েছেন বঙ্গবীর। শুরু হলো আলোচনা সভা। প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করলেন তিনি। হাতে একটি খবরের কাগজ। পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল এই হৃদয়বিদারক ঘটনা।

নাসরিন সিদ্দিকী বললেন, এটা আল্লাহর নেয়ামত। এটা আমার মেয়ে। আমার অন্যান্য সন্তানের মতো তুমি ওকে মানুষের মতো মানুষ করো। নাসরিন সিদ্দিকীও তাকে সাদরে গ্রহণ করলেন। ‘কাক’, ‘কুকুর’ ও ‘কাদের সিদ্দিকী’র নামের প্রথম বর্ণ অনুসারে বঙ্গবীর তার নাম রাখলেন ‘কুশি’। মায়ের মমতায় কুশিকে বুকে আগলে রাখলেন নাসরিন সিদ্দিকী। এরই মধ্যে কেটে গেছে আটটি বছর। কুশি এখন রাজধানীর একটি বিখ্যাত ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থী।

কাদের সিদ্দিকীর কাছে কুশির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন, ‘আমার মা মারা যাওয়ার পর কুশিকে পেয়ে মায়ের অভাব পূরণ হয়েছে। মা বেঁচে থাকলে বাড়িতে যেমন আনন্দ হতো, কুশি আসার পর সেই আনন্দ ফিরে এসেছে। সে আমাদের সংসারে আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ রহমত।

তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার একটি ভালো পরিবার। আমি তার প্রমাণ পেয়েছি কুশিকে দিয়ে। আমার স্ত্রী-সন্তানরা কুশিকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। অন্য দুই সন্তান কুড়ি ও দ্বীপ একে-অপরের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লেগে থাকলেও সংসারে কুশির আবির্ভাবের পর সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমার তিন সন্তান পরস্পরকে না দেখে থাকতে পারে না।’
কাদের সিদ্দিকী বললেন, ‘কুশিসহ সংসারের সব সদস্য নিয়ে আমি স্বর্গের সুখ অনুভব করি। এভাবেই আমার বাকি জীবনটা কেটে যাক- আল্লাহর কাছে এটাই প্রার্থনা।’