বঙ্গবন্ধু না জন্মালে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হতো কিনা সন্দেহ: বিজিবি ডিজি
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন-বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় দিয়ে তিল তিল করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমি রচনা করেছেন।
বিশেষ প্রতিনিধি : বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু না জন্মালে ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হতো কিনা তা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ আছে। তাই বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ কখনোই ভিন্নভাবে চিন্তা করা যায়না, ভবিষ্যতেও যাবে না।বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, ওএসপি, বিএসপি, এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল (Major General Mohammad Ashrafuzzaman Siddiqui, OSP, BSP, SUP, ndc, psc, MPhil) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে সকালে বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবি’র অন্যান্য সকল ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১০.৩০টায় বঙ্গবন্ধুর ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’ এর ভাষণ, ১৯৭৪ সালের ০৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর ৩য় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ও ‘অসমাপ্ত মহাকাব্য’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিশেষ আলোচনা করা হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজ বাঙালি জাতির জন্য একটি অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় দিয়ে তিল তিল করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমি রচনা করেছেন। বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বাদ এবং স্বাধীনতা দেবার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সকল অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করেছেন; অকাতরে জেল-জুলুম ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তাঁর ছিল অকৃত্রিম ভালবাসা।
তিনি শুধু স্বাধীনতার বীজ বপনই করেননি, স্বাধীনতাকামী মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশকে মুক্ত করেছেন। কীর্তিমান এই অবিসংবাদিত নেতার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন প্রতিটি বাঙালির জন্য অনুকরণীয় ও গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধু শিশুদেরকে অনেক ভালবাসতেন।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘‘আমার যখন ভীষণ মন খারাপ থাকে তখন আমি শিশুদের সঙ্গে মিশে আমার মনটা ভালো করে নেই, কারণ শিশুরা পবিত্র এবং নিষ্পাপ।” শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর এই অকৃত্রিম ভালবাসার কারণেই তাঁর জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়। তাই বঙ্গবন্ধুর এই সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু কেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি? কেন জাতির পিতা? তা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন।
বিজিবি মহাপরিচালক আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল পর্যালোচনা করলে তাঁর প্রজ্ঞা ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে ভিশন ছিল তার পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি মহাপরিচালক জাতির পিতার স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সকলকে সততা, আনুগত্য, নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি’র ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব পালনের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ বাদ যোহর পিলখানাস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের মসজিদে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার, দেশ, জাতি ও বিজিবি’র উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সদর দপ্তর বিজিবি, পিলখানার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে সীমিত আকারে আলোকসজ্জা এবং সারাদেশে বিজিবি’র সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে ব্যানার, ফেস্টুন এবং পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহে বিজিবি’র সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবীর সৈনিক, অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।