• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য মহিউদ্দিন না’ফেরার দেশে


প্রকাশিত: ৩:১৪ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬১ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আর নেই mohiuddin chow-www.jatirkhantha.com.bd(ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাহি রাজিউন)। শুক্রবার ভোরে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। এর আগে গতকাল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এখানে ভোর ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তার বড় ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রেখেছিলেন। রাত ৩টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আমার বাবার জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।

তার মৃত্যুর খবর শুনে রাতেই হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। এ সময় তাদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।হাসপাতালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বাদ আসর লালদীঘি ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে মহিউদ্দিন চৌধুরী সুস্থ হওয়ার পর গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামে ঘরে ফেরেন। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সড়কপথে তিনি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন।

স্কয়ার হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসকও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। এছাড়া ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বড় ছেলে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।গত ১১ নভেম্বর রাতে তিনি হার্টের সমস্যা ও কিডনিজনিত রোগে গুরুতর অসুস্থ নগরীর ম্যাক্স হাসাপাতালে ভর্তি হন।

পরের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টারে করে এনে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ১৬ নভেম্বর অসুস্থ মহিউদ্দিনকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানে এনজিওগ্রাম সম্পন্নের পর তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। প্রায় ১০ দিন পর গত ২৬ নভেম্বর তিনি দেশে ফিরে পুনরায় স্কয়ার হাসাপাতালে ভর্তি হন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম হোসেন আহমেদ চৌধুরী ও মা বেদুরা বেগম।ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য; মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন, যুদ্ধের পর জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর প্রতিশোধ নিতে পালিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ১৯৭৮ সালে দেশে ফেরেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে ছিলেন। চট্টগ্রামে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালের মেয়র নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন মন্ত্রীকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ৭৪ বছরের জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন ১৬ বছর। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি।মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শোক প্রকাশ করেছেন।