বঙ্গবন্ধুর খুনি নুর চৌধুরীকে ধরে আনার প্রক্রিযায় সম্মত কানাডা
বিশেষ প্রতিনিধি : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি এবং মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি নুর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া গ্রহণে কানাডা সম্মত হয়েছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ডিওন মঙ্গলবার অটোয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দুই মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী নুর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাসটিন ট্রুডোর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ফলোআপ হিসাবে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নুর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাজাপ্রাপ্ত আসামি নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান।
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি নুর চৌধুরী ১৯৯৬ সাল থেকে কানাডায় বসবাস করছে। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিও উত্থাপিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
বৈঠকে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে সকল প্রকার সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। এ সময় কানাডার মন্ত্রী আইনের শাসন এবং মানবাধিকার প্রশ্নে কানাডার পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে এয়ার সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্টের (এএসএ) সর্বশেষ অবস্থা, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন অ্যাগ্রিমেন্ট (এফআইপিএ) এবং ফরেন অফিস কনসালটেশন বিষয়ে (এফওসি) সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা হয়। এফআইপিএ ব্যতিত অপর সব চুক্তি এবং এমওইউ এখনও ঝুঁলে রয়েছে। এটি কানাডার বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কানাডার পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত চুক্তি ও এমওইউ নিয়ে তারা কাজ করছেন। এ বিষয়ে খুব শিগগির তাদের অবস্থান বাংলাদেশকে জানাতে পারবে।
বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই মন্ত্রীই সন্তোষ প্রকাশ করেন। উভয় দেশের বর্তমানে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বলেন, গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ট্রিল সফরে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায় আরও বলা হয়, বৈঠকে মাহমুদ আলী কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টীফেনের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কিভাবে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরিত হবার পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তা দেখার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান।